পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/১৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বৌদ্ধসাধনা

বিবেচিত হইবে সন্দেহ নাই। কিন্তু এই নিয়মপালন দ্বারা সাধককে যে গভীর সংযম স্বীকার করিতে হয়, তাহা দ্বারা হৃদয় গভীর বললাভ করে। মানবচরিত্রের নীচবৃত্তিগুলি যখন প্রশমিত হয়, তখন ভিতরে বিবিধ কল্যাণকর সদ্‌গুণ জন্মিতে থাকিবেই। হিংসাবৃত্তি ত্যাগ করিয়া মানব যখন অক্রোধী হয়, তখন ধীরে ধীরে তাহার হৃদয়ে জীব-প্রীতির সঞ্চার হইতে থাকে। ধনের প্রতি মানুষের যখন অতিমাত্র লুব্ধতা অন্তর্হিত হয়, তখনই তাহার দাক্ষিণ্যবৃত্তি জন্মিতে থাকে। কামলালসা হইতে মুক্তিলাভ করিয়া মানুষের চিত্ত যখন নির্ম্মল হইয়া উঠে, তখনই নিঃস্বার্থ প্রেম তাহার হৃদয় অধিকার করিতে পারে। শীল অচ্ছিদ্র ও অখণ্ড হইলেই অধ্যাত্মবোধের সঞ্চার হয়। সুতরাং বুদ্ধদেবের এই শীলগুলি একমাত্র বাহির হইতে নহে, ভিতর হইতেও মানুষকে কল্যাণের পথে অগ্রসর করিয়া দিবে।

 গৃহী ও সন্ন্যাসী প্রত্যেক বৌদ্ধকেই বহুসংখ্যক সরল, সহজ, ধর্ম্মনীতি মানিয়া চলিতে হয়। বুদ্ধদেবের এই স্বতঃসিদ্ধ শীলগুলি মানবের অন্তর্নিহিত নৈতিক বীর্য্যকে উদ্বোধিত করিবার পক্ষে আনুকূল্য করিয়া থাকে। এইগুলিই মঙ্গলবর্ত্মের এবং নির্ব্বাণলাভের সোপান। তিনি কতকগুলি শীলকে বিশেষ করিয়া মহামঙ্গল আখ্যা দিয়া বলিয়াছেন:—

 (ক) অসতের সেবা না করা, সজ্জনের সেবা ও সঙ্গ এবং পূজার্হের পূজা।

 (খ) সাধনার অনুকূল ক্ষেত্রে বাস, পূর্ব্বকৃত পুণ্যের বৃদ্ধিচেষ্টা,শীল-পালনে ও পুণ্যকার্য্যে আপনাকে সম্যগ্‌ রূপে নিযুক্ত করা।

 
১১৩