পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/১৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বৌদ্ধসাধনা

গ্রহণ কর। আপনি ভিন্ন অন্য কাহারও উপর কখনো নির্ভর করিও না।

 বৌদ্ধসাধনার যেমন “না”-য়ের দিক আছে, তেমনি ইহার একটি আশ্চর্য্য “হাঁ”-য়ের দিকও আছে। নির্ব্বাণকামী সাধক দুঃখের প্রেরণায় যেমন জীবের শরীরকে ব্যাধিমন্দির, ক্ষণস্থায়ী, দুঃখময় ও জন্মমৃত্যুর অধীন মনে করেন, তেমনি তাঁহাকে ভাবিতে হইবে, জীবমাত্রেই তুল্য, কোনো জীবই ঘৃণার পাত্র নহে, সকলকেই সমান প্রীতি করিতে হইবে। সাধককে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের দেবমানব, জীবজন্তু সকলের সুখকামনা করিতে হইবে, শক্রমিত্র সকলেরই কল্যাণ-ভাবনায় তাঁহার হৃদয় পূর্ণ থাকিবে। সকলে রোগ শোক ব্যাধি মৃত্যু হইতে মুক্তিলাভ করুক, এই শুভচিন্তা তাঁহার প্রতিদিনের ভাবনা হইবে।

 দুঃখীর দুঃখে সাধকের হৃদয় করুণায় দ্রব হইবে, সুখীর সুখে তাঁহার চিত্ত নন্দিত হইবে। তিনি ভাবিবেন,

দিট্‌ঠা বা যে চ অদিট্‌ঠা
যে চ দূরে বসন্তি অবিদূরে।
ভূতো বা সম্ভবেসী বা
সব্বে সত্তা ভবন্তু সুখিত’ত্তা॥

কি দৃষ্ট কি অদৃষ্ট, কি দূরবাসী কি নিকটবাসী, কি ভূতকালের কি ভবিষ্যৎকালের, যে কোন প্রাণী হউক না কেন—সকলে সুখী হউক। মৈত্রী, করুণা, মুদিতা, অশুভ, উপেক্ষা বৌদ্ধ সাধকের এই পঞ্চ প্রকারের ভাবনা ভাবিতে হইবে।

 বৌদ্ধসাধনাকে আমরা জ্ঞানমূলক প্রেমের সাধনা বলিতে

১১৫