পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/১৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বৌদ্ধসাধনা

 মানবের এই মহদ্দুঃখের অস্তিত্ব, ইহার উৎপত্তির কারণ এবং নিবৃত্তির উপায়-নির্দ্ধারণেই মহাপুরুষ বুদ্ধের প্রতিভা প্রকাশ পাইয়াছে। অবিদ্যাকেই তিনি মূলব্যাধি বলিয়া নির্দ্দেশ করিয়াছেন। এই অবিদ্যার বিনাশ হইলেই ইহ-জীবনেই মানব নির্ব্বাণ লাভ করিতে পারেন। বুদ্ধদেব ধম্মপদে বলিয়াছেন—অবিজ্জা পরমং মলং।

 তিনি সাধককে সম্বোধন করিয়া বলিতেছেন:—এতং মলং পহত্বান নিম্মলা হোথ ভিক্‌খবো। হে ভিক্ষুগণ, এই মলিনতা ত্যাগ করিয়া নির্ম্মল হও। এই অবিদ্যার বিনাশের জন্যই তিনি অষ্ট আর্য্য মার্গ নির্দ্দেশ করিয়াছেন। ইহারই সহিত সংগ্রামের জন্য সাধক মৈত্রী করুণা ও মুদিতা ভাবনা অবলম্বন করেন; এই জন্যই তিনি মানব-জীবনের অপরিহার্য্য দুঃখ এবং সমগ্র প্রাণীর মূল ঐক্য চিন্তা করিয়া থাকেন। শীলগ্রহণেরও তাৎপর্য্য ঐ নিকৃষ্টতম মলিনতার বা অবিদ্যার বিনাশ।

 অংশতঃ এই অবিদ্যাকেই পরাভূত করিয়া সাধক যখন সাধনার ক্ষেত্রে প্রবেশ করেন, তখনও পাপপ্রলোভনের নানামূর্ত্তি ধরিয়া এই অবিদ্যাই তাঁহাকে নানা দিক হইতে আক্রমণ করিয়া থাকে। সাধক জানেন, অবিদ্যা তাঁহাকে বিশ্ব হইতে বিমুক্ত করিয়া ক্ষুদ্র “অহং” এর সংকীর্ণ প্রাচীর মধ্যে আটক করিয়া রাখিয়াছে; মাঝে মাঝে চকিতের ন্যায় তিনি তাঁহার আপনার সেই বৃহৎ সত্তা অনুভব করেন বটে, কিন্তু সাধারণতঃ তিনি তাঁহার ক্ষুদ্র সত্তাকেই সত্য বলিয়া মনে করেন। অবিদ্যার বশে প্রবর্ত্তকের মনে এই সময়ে কখনো কখনো স্বীয় অবলম্বিত আর্য্যমার্গের প্রতি অবিশ্বাস

১১৯