আপনার ছোট অহংকে সংকুচিত করেন; তিনি “উস্সুকেসু মনুস্সেসু বিহরাম অনুস্সুক।”—আসক্ত মনুষ্যদের মাঝখানে অনাসক্তভাবে বিচরণ করেন; তিনি বিশুদ্ধ জ্ঞানের দ্বারা—“জিঘচ্ছা পরমা রোগা সঙ্খারা পরমা দুখা” লোভকে পরম রোগ এবং সংস্কারকে পরম দুঃখ জানিয়া পরম সুখ নির্ব্বাণ লাভ করেন। আর একদিক দিয়া তিনি তাঁঁহার অন্তর সত্তাকে মৈত্রীভাবনাদ্বারা ভূলোকে দ্যুলোকে স্বর্লোকে পরিব্যাপ্ত করিয়া দিয়া থাকেন। বৌদ্ধসাধনা যথার্থরূপে বুঝিতে হইলে এই দুইটি দিকই ভাবিয়া দেখিতে হইবে।
অন্তিম শয্যায় মহাপুরুষ বুদ্ধ এই সাধনার যে প্রণালী ব্যাখ্যা করিয়াছেন মহাপরিনিব্বান সুত্তে তাহা বর্ণিত আছে। ইহাতে তিনি চারিটি ধ্যান, চারিটি ধর্ম্ম-প্রচেষ্টা, চারিটি ঋদ্ধিপাদ, পাঁচটি নৈতিক বল, সাতটি বোধ ও আটটি পথ নির্দ্দেশ করিয়াছেন। তাঁঁহার প্রদর্শিত এই সাধনা বিশুদ্ধ জ্ঞান ও প্রেমেরই সাধনা। উরগবগ্গে মেত্তাসুত্তে সাধকের মৈত্রী ও কল্যাণ ভাবনার যে বর্ণনা রহিয়াছে তাহা অতীব চিত্তস্পর্শী। তথায় বলা হইয়াছে যে সাধক শান্তিপদ নির্ব্বাণ লাভ করিতে চাহেন; তিনি কর্ত্তব্যপালনে কুশল, সরল, বিনীত ও নিরভিমান হইবেন, তাঁহার অভাব অল্পই থাকিবে, অল্পেই তিনি সন্তুষ্ট হইবেন, তাঁহার কোন দুর্ভাবনার হেতু থাকিবে না, তিনি জিতেন্দ্রিয়, সদ্বিবেচক, অপ্রগল্ভ ও অনাসক্ত হইবেন; তিনি ক্ষুদ্র পাপও আচরণ করিবেন না, তিনি ভাবিবেন সকল জীব সুখী ও নিরাপদ্ হউক। তিনি ভাবিবেন, সবল দুর্ব্বল, ছোট বড়, দৃষ্ট অদৃষ্ট, দূরবর্ত্তী সমীপবর্ত্তী,