পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/১৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বুদ্ধের জীবন ও বাণী

ভূতকালের ভবিষ্যৎকালের সকল প্রাণী সুখী হউক। তিনি কাহাকেও বঞ্চনা করিবেন না, কাহাকেও ঘৃণা করিবেন না, অথবা ক্রোধের বশবর্ত্তী হইয়া কাহারও অহিত চিন্তা করিবেন না; জননী যেমন নিজের আয়ু দ্বারা একমাত্র পুত্রের জীবন রক্ষা করেন, তিনিও তেমনি সকল প্রাণীর প্রতি অপরিমেয় প্রীতি রক্ষা করিবেন; জগতের ঊর্দ্ধে নিম্নে চতুর্দ্দিকে তিনি তাঁহার হিংসাশূন্য বৈরশূন্য বাধাশূন্য অপরিমেয় প্রীতি ব্যাপ্ত করিয়া দিবেন; দাঁড়াইতে, বসিতে, চলিতে, শুইতে, যাবৎ না নিদ্রিত হইয়া থাকেন তাবৎ, তিনি এই মৈত্রীভাবনায় নিবিষ্ট থাকিবেন। চিত্তের এই অবস্থাকেই সর্ব্বোৎকৃষ্ট বলা হইয়াছে। বৌদ্ধশাস্ত্র ইহাকে ব্রহ্মবিহার বা সাধুজীবন আখ্যা দিয়াছেন। বৌদ্ধসাধনার শিরোভাগে এই অনির্ব্বচনীয় মৈত্রী ও মঙ্গল বিরাজিত। এই সাধনা মানবকে পরিণামে বিনাশের মধ্যে লইয়া যাইতে পারে না। পূজ্যপাদ কবিবর শ্রীযুক্ত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয় একপত্রে লিখিয়াছেন:—

 বুদ্ধদেবের আসল কথাটা কি, সেটা দেখ্‌তে গেলে তাঁর শিক্ষার মধ্যে যে অংশটা নিগেটিভ্‌ সেদিকে দৃষ্টি দিলে চলবে না, যে অংশ পজিটিভ্‌ সেইখানে তাঁর আসল পরিচয়। যদি দুঃখ দূরই আসল কথা হয়, তাহলে বাসনালোপের দ্বারা অস্তিত্ব লোপ করে দিলেই সংক্ষেপে কাজ শেষ হয়; কিন্তু মৈত্রীভাবনা কেন? এর থেকে বোঝা যায় যে ভালবাসার দিকেই আসল লক্ষ্য। আমাদের অহং আমাদের ভালবাসা স্বার্থের দিকে টানে, বিশুদ্ধ প্রেমের দিকে আনন্দের দিকে নয়। এইজন্য অহংকে লোপ করে দিলেই সহজে সেই আনন্দলোক পাওয়া যাবে। “পূর্ণিমা” বলে “চিত্রায়” একটা

১২৪