পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৷৶৹

 যে মুহূর্ত্তে সাধকদের অন্তরমধ্যে মহাপুরুষগণ প্রবেশ করেন, সেই মুহূর্ত্তেই তাঁহারা ঐতিহাসিক জন-সুলভ সব সীমাকে অতিক্রম করেন। তখন কোথায় সীমা নাই, শেষ নাই এবং কোনরূপ পরিমাণ নাই। সবই অনন্ত সবই অসীম সবই অশেষ। প্রেমের পরশমণির সিংহাসনের একেবারে উপরে যে তিনি আজ বসিয়াছেন। এই জন্যই বুদ্ধের দুই রূপ আছে, এক রূপ ঐতিহাসিকের নেত্রে, সেখানে তিনি রাজার পুত্র, কপিলবাস্তুতে তাঁহার জন্ম, নিরঞ্জনার তীরে তিনি সাধনা করিয়াছেন ইত্যাদি। কিন্তু আর এক রূপ আছে ভক্তের অন্তরে, সেখানে ভক্তের হৃদয়কমলে তাঁহার জন্ম, ত্রিলোকের ঐশ্বর্য্য তাঁহার ভূষণ, সকল বিচিত্র ব্যাপারই তাঁহার লীলা ইত্যাদি।

 এই পন্থার বিপদ বিস্তর। একটু প্রাণহীন হইলেই পচিয়া উঠিবার আর শেষ নাই। কিন্তু সাধনা অন্তরের বস্তু প্রেমের ধন। মহাপুরুষকে অন্তরলোকে না নিয়া সাধক যে পারেন না; উপায় যে নাই।

 তাই ইতিহাসে বুদ্ধের এক রূপ, বৌদ্ধ সাধকদের কাছে আর এক রূপ, সেখানে তাঁহারা তাঁহাকে পূজা করেন, একেবারে বুদ্ধেরই তপস্যা করেন। এই দুই রূপে সামঞ্জস্য কোথায়? সামঞ্জস্য করা কি কঠিন, সত্যের জরীপে মহাপুরুষের চরিত্র যায় শুকাইয়া, ভক্তের প্রেমবারি সেচনে অনেক সময় যায় পচিয়া। সামঞ্জস্য হইলে যে বাঁচা যাইত।

 এই গ্রন্থে সেই সামঞ্জস্যের জন্য, গ্রন্থকার প্রাণপণ চেষ্টা করিয়াছেন। বড় কঠিন কাজ, সত্যকে রক্ষা করিতে হইবে অথচ ভক্ত মহাপুরুষের জীবনীকে প্রাণহীন করাও হইবে না, বড় কঠিন ব্রত। মহাদেবের কুণ্ঠিত নৃত্যের চিত্র মনে পড়ে। আনন্দ তাঁহার