বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/১৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বুদ্ধের জীবন ও বাণী

প্রেমমূলক নহে, অনন্ত জীবের অশেষ দুঃখ তাঁহাদের চিন্তার বিষয়ীভূত হইতে পারে না, সুতরাং তাঁহারা বাসনার উচ্ছেদ সাধন করিয়া নির্ব্বাণ লাভ করিয়া থাকেন। এই নির্ব্বাণ, বাসনার নির্ব্বাণ মাত্র, প্রেম করুণা ও দাক্ষিণ্যের চরম অভিব্যক্তি নহে। কারণ ইহারা সাধনার শেষে যে সার্থকতা লাভ করিলেন সমদুঃখী মানব তদ্দ্বারা বিশেষ উপকৃত হইল না; সিদ্ধি লাভের পরে তাঁহারা পাপভারাক্রান্ত সাধারণ নরনারীর সহিত মিশিতেও সংকোচ বোধ করিয়া থাকেন। তাঁহাদের ধারণা এই যে, সর্ব্বজীবের নির্ব্বাণ সাধনা তাঁহাদের ক্ষুদ্র জ্ঞান ও শক্তির অতীত।

 কিন্তু বোধিসত্ত্ব আপনাকে বুদ্ধেরই স্থলাভিষিক্ত বলিয়া অনুভব করেন, তিনি একাকী সংসার সমুদ্র অতিক্রম করিয়া সুখী নহেন; তিনি বলেন—“আমি বুদ্ধত্ব ও সর্ব্বজ্ঞত্ব লাভ করিয়া স্বয়ং যেমন সংসার সমুদ্র পার হইব, তেমনি সমস্ত দেবমানবকে পরপারে বহন করিয়া লইবার জন্য প্রাণপণ সংগ্রাম করিব। যখন দেখিতেছি, আমার প্রতিবেশী আমারই ন্যায় দুঃসহ দুঃখের বোঝা বহন করিতেছে তখন আমি কেবল মাত্র আপনারই দুঃখ দূর করিবার জন্য ব্যস্ত হইব কেমন করিয়া?” এই নিমিত্ত তিনি সকল জীবের দুঃখের ভার আপনার শিরে গ্রহণ করিয়া অসাধ্য সাধনে প্রবৃত্ত হইয়া থাকেন।

 এই অসমসাহসিক সাধক কোন্‌ ভাবনার দ্বারা প্রণোদিত হইয়া এই সাধনসমরে অবতীর্ণ হইয়া থাকেন? তিনি ভাবেন— অবিদ্যার বশে জীবকুল অহোরাত্র পাপাচরণে নিরত রহিয়াছে এবং তাহারই ফলে অশেষ ক্লেশ ভোগ করিতেছে। তাহাদের

১৩০