বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বুদ্ধের জীবন ও বাণী

কেমন বেদনা পাইয়াছে পরীক্ষা করিবার জন্য সিদ্ধার্থ তীরের অগ্রভাগ নিজ হস্তে বিঁধাইয়া দিলেন এবং তদনন্তর সজলনয়নে আবার তাহার সেবায় রত হইলেন। তাঁহার করুণ শুশ্রূষায় পাখী বাচিয়া উঠিল।

 ইহার মধ্যে সিদ্ধার্থের জ্ঞাতিভ্রাতা দেবদত্ত উদ্যানে উপস্থিত হইল। তাহার অব্যর্থ সন্ধানেই হংস ভূতলশায়ী হইয়াছিল বলিয়া সে পাখীটি দাবী করিল। সিদ্ধার্থ বিনীতভাবে কহিলেন “আমি এই পাখীটি কিছুতেই তোমাকে দিতে পারি না, ইহার যদি মৃত্যু ঘটিত, তাহা হইলে তুমিই পাইতে, আমার সেবায় এই পাখীটি বাঁচিয়া উঠিয়াছে, সুতরাং ইহাতে এখন আমারই অধিকার।” এই পাখীর অধিকার লইয়া দুইজনের মধ্যে তুমুল বাদানুবাদ হইল। অবশেষে প্রবীণ ব্যক্তিদের সভায় ইহার বিচার হইল। তাঁহারা বলিলেন “যিনি প্রাণরক্ষা করেন জীবিত প্রাণীর উপর তাঁহারই অধিকার, সুতরাং সিদ্ধার্থই এই পাখী পাইবেন।” সিদ্ধার্থের যে করুণরাগিণীতে একদিন সমগ্র মানবের হৃদয়তন্ত্রী ঝঙ্কৃত হইবে এই ঘটনায় কৈশোরেই তাহার পূর্ব্বাভাস লক্ষিত হইল।

 কপিলবাস্তু নগরে প্রতিবৎসর হলকর্ষণোৎসব হইত। এই দিন রাজা, অমাত্য পারিষদ ও পৌরজনসহ মহাসমারোহে হলচালনা করিতেন। একবার কিশোর সিদ্ধার্থ এই উৎসবে যোগদান করেন। উৎসবমত্ত পুরবাসীদের কলকোলাহলের মধ্যে তিনি একটি জম্বুবৃক্ষের মূলে আসন গ্রহণ করিলেন। তাঁহার গভীর দৃষ্টির সম্মুখে নিষ্ঠুরতার ও হিংসার বীভৎসভাব প্রকাশিত হইয় পড়িল। তিনি দেখিলেন উদরান্ন-সংগ্রহের জন্য প্রখর সূর্য্যকিরণে কৃষকগণ ঘর্ম্মাক্ত-