পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
গৃহত্যাগ ও দেশপর্য্যটন

তাঁহার কেশজাল কাটিয়া ফেলিলেন এবং এক ব্যাধের ছিন্ন কাষায় বস্ত্রের সহিত আপনার বসন বদল করিয়া ভিখারী সাজিলেন। কুমারের এই দীনবেশ দেখিয়া ছন্দক রোদন করিতে লাগিল। সিদ্ধার্থ তাহাকে সান্ত্বনা দিয়া কপিলবাস্তুতে পাঠাইয়া দিলেন।

 ভগ্নহৃদয় শুদ্ধোদনের সাংসারিক সুখের আশা চিরদিনের জন্য অন্তর্হিত হইল। পতিপ্রাণ গোপ সর্ব্বপ্রকার বিলাস বর্জ্জন করিয়া যৌবনে যোগিনী হইয়া রহিলেন।

 এদিকে সিদ্ধার্থ একাকী অপরিজ্ঞাত পথ ধরিয়া চলিতে লাগিলেন। কোথায় আছেন, কোথায় যাইবেন, তাহা তিনি জানেন না; তবে তাঁহার মনে এই দৃঢ় প্রত্যয় ছিল যে, অনন্ত জীবের জন্য তিনি মুক্তির একটি উদার পথ আবিষ্কার করিবেন।

 অণোমা নদীর তীর হইতে সিদ্ধার্থ দক্ষিণপূর্ব্বদিকে অগ্রসর হইতে লাগিলেন। একে একে তিন জন ঋষির আশ্রমে তিনি আতিথ্য গ্রহণ করেন। কোন্‌ পথ অবলম্বন করিয়া সাধনায় প্রবৃত্ত হইলে তিনি শ্রেয়ঃ লাভ করিতে পরিবেন, তাহা তিনি জানিতেন না। এই নিমিত্ত দেশপ্রচলিত সাধনার বিভিন্ন পদ্ধতির আলোচনায় তিনি নিযুক্ত হইলেন।

 এক আশ্রমে তিনি দেখিলেন যে, তথাকার সাধুরা কেহ পক্ষীর ন্যায় শস্য কুড়াইয়া ভক্ষণ করেন, কেহ মৃগের ন্যায় ঘাস খাইয়া জীবন রক্ষা করিতেছেন, কেহ বা সৰ্পের ন্যায় বাতাহারে দিন যাপন করিতেছেন। সিদ্ধার্থ প্রশ্ন করিয়া জানিলেন, এই সাধুরা বিশ্বাস করেন যে, ইহলোকে এইরূপ কঠোর সাধনা করিলে জন্মান্তরে তাঁহারা স্বর্গে স্থান পাইবেন। স্বর্গে দুঃখের লেশমাত্র নাই—চির

 
১৭