বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
সাধনা ও বধিলাভ

অন্তর ও বাহির তাঁহাকে আহ্বান করিয়া যেন ইহাই বলিতেছিল,—“হে সাধক, হে বরেণ্য, সিদ্ধিলাভের মাহেন্দ্রক্ষণ সমাগতপ্রায়, তুমি মহাসাধনায় সিদ্ধিলাভ করিয়া কল্যাণের আকর নির্ব্বাণ আবিষ্কার কর।”

 স্নিগ্ধ শ্যামল সন্ধ্যাকালে সিদ্ধার্থ বোধিদ্রুমমূলে নবীন তৃণ বিছাইয়া সমাসীন হইলেন। সাধনায় প্রবৃত্ত হইবার পূর্ব্বেই তিনি সঙ্কল্প করিলেন—

ইহাসনে শুষ্যতু মে শরীরং
ত্বগস্থি মাংসং প্রলয়ঞ্চ যাতু।
অপ্রাপ্য বোধিং বহুকল্পদুর্লভাং
নৈবাসনাৎ কায়মতশ্চলিষ্যতে॥

 এই আসনে আমার শরীর শুকাইয়া যায় যাক্‌, ত্বক, অস্থি, মাংস, ধ্বংস প্রাপ্ত হয় হউক, তথাপি বহুকল্পদুর্লভ বোধিলাভ না করিয়া আমার দেহ এই আসন ত্যাগ করিয়া উঠিবে না।

 পুরুষসিংহ সিদ্ধার্থ সঙ্কল্পের বর্ম্মে আবৃত হইয়া সাধনসমরে প্রবৃত্ত হইলেন। শুদ্ধ ও নিষ্পাপ হইবার জন্য তিনি আপনার অন্তরের অন্তরতম প্রদেশের প্রসুপ্ত পাপলালসাগুলি উৎপাটিত করিয়া ফেলিবার নিমিত্ত যুদ্ধ করিতে লাগিলেন। নির্ব্বাণের পূর্ব্বে দীপশিখা যেমন দাউ দাউ করিয়া জ্বলিয়া উঠে, সিদ্ধার্থের পাপলালসাগুলি চিরকালের জন্য নির্ব্বাপিত হইবার পূর্ব্বে অল্প সময়ের জন্য তেমনি আর একবার প্রদীপ্ত হইয় উঠিল। এই বিদ্রোহী পাপসমূহের সহিত তাঁহার অন্তরে যে, তুমুল কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ ঘটিয়াছিল, বিবিধ কাব্যে ও ধর্ম্মগ্রন্থে তাহার চমৎকার রূপক বর্ণনা রহিয়াছে।

২৭