পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বুদ্ধ ও তাঁহার পঞ্চ শিষ্য

 বুদ্ধ ভাবিলেন—“আমি যে মহাসত্য লাভ করিয়াছি, যদি তাহা সাধারণের মধ্যে প্রচার না করি, তাহা হইলেই ইহা দ্বারা জীবের কি লাভ হইল? দুঃখের ফাঁদে পড়িয়া যাহারা জন্মজন্মান্তর কঠোর সংগ্রাম করিতেছে এবং তৎসঙ্গে অশেষ যাতনা ভোগ করিতেছে আমার তাহাদিগকে নির্ব্বাণের বাণী শুনাইতে হইবে। সর্ব্ব দুঃখনির্ব্বাপক এই বাণী একবার তাহাদের চিত্ত স্পর্শ করিলেই, তাহার পরম শান্তি লাভ করিতে পরিবে।”

 বুদ্ধের চিত্তে সময়ের জন্য সংশয় উপস্থিত হইল। তিনি ভাবিলেন, যাহারা তৃষ্ণায় অভিভূত, তাহারা আমার এই জ্ঞানগম্য গভীর ধর্ম্ম বুঝিবে না। তাহাদের চঞ্চলবুদ্ধি জগতের কার্য্য কারণের নিয়ম, সংস্কার ও উপাধির নিরোধ, সংযম এবং নির্ব্বাণ ধারণা করিতে পারিব না। সুতরাং এই ধর্ম্ম প্রচার করিলে আমার চেষ্টা ব্যর্থ হইবে। একদিকে এই সংশয়, অপরদিকে জীবের প্রতি অপ্রমেয় করুণা, দুইদিক্ হইতে বুদ্ধের চিত্তকে আঘাত করিতে লাগিল। আপনার মনের মধ্যে আপনি তর্কবিতর্ক করিয়া অবশেষে তিনি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হইলেন যে, সত্যানুরাগী শ্রদ্ধাশীলদের নিকটে আমার এই মুক্তির বাণী প্রথমে প্রচার করিতে হইবে; তাহার পরে সত্য ধীরে ধীরে আপনাকে আপনি প্রতিষ্ঠিত করিবে। কিন্তু কে সেই শক্তিশালী ব্যক্তি যিনি সর্ব্বপ্রথমে এই নব ধর্ম্মের পতাকা বহন করিবেন?

 প্রথমে অড়ার কালাম ও রামপুত্র রুদ্রকের কথা বুদ্ধের মনে পড়িল। কিন্তু তিনি জানিতে পারিলেন যে, তাঁহারা আর জীবিত নাই। ইহার পর পঞ্চ শিষ্যের স্মৃতি তাঁহার মনে উদিত হইল।

৩১