বুদ্ধের জীবন ও বাণী
পবিত্রতাসাধন, সংক্ষেপতঃ ইহাই ধর্ম্ম। জননী যেমন আপনার জীবন দিয়াও পুত্রকে রক্ষা করেন, যিনি সার সত্য অবগত হন, তিনিও তেমনি সর্ব্বজীবের প্রতি অপরিমেয় বিশুদ্ধ প্রীতি রক্ষা করিয়া থাকেন। তাঁহার হিংসাশূন্য বৈরশূন্য বাধাশূন্য প্রীতি, ইহলোক কেন, লোকলোকান্তরেও পরিব্যাপ্ত হইয়া থাকে। এই মৈত্রীময় ভাবের মধ্যে তিনি বিহার করিয়া থাকেন।”
সুমধুর ধর্ম্মবাণী শ্রবণ করিয়া মগধরাজ বিম্বিসারের অন্তর ভক্তিতে ও বিস্ময়ে পূর্ণ হইল। বুদ্ধের চরণে প্রণত হইয়া তিনি তাঁহার শিষ্যত্ব স্বীকার করিলেন। বুদ্ধের এবং তাঁহার অনুচরদিগের বাসের নিমিত্ত তিনি নগরের বহির্ভাগস্থ “বেণুবন” নামক একটি মনোহর ও নিভৃত উদ্যান দান করিলেন। এই সময়ে বুদ্ধদেবের পঞ্চ শিষ্যের অন্যতম অশ্বজিৎ জম্বুদ্বীপে পরিভ্রমণ করিয়া রাজগৃহে গুরুসমীপে প্রত্যাগমন করেন। তিনি একদিন ভিক্ষাপাত্র হস্তে নগরে গৃহে গৃহে ভিক্ষা করিতেছিলেন, এমন সময়ে উপতীষ্যনামক এক জিজ্ঞাসু ব্রাহ্মণ পরিব্রাজক তাঁহার সেই সৌম্যমূর্ত্তি দর্শন করিয়া বিস্ময়াবিষ্ট হইলেন। উপতীষ্যের মনে এইরূপ দৃঢ় প্রত্যয় জন্মিল যে, এই ভিক্ষুক সত্য পথের সন্ধান পাইয়াছেন। তিনি বিনীতভাবে অশ্বজিৎকে জিজ্ঞাসা করিলেন—“আর্য্য, আপনি কোন মহাত্মার শিষ্যত্ব স্বীকার করিয়াছেন?” অশ্বজিৎ বুদ্ধের নাম করিলেন। উপতীষ্য বুদ্ধের ধর্ম্মমত শুনিবার নিমিত্ত আবার প্রশ্ন করিলেন। অশ্বজিৎ মনে করিলেন, উপতীষ্য নবধর্ম্মের মত খণ্ডন করিবার নিমিত্ত হয়ত তাহার সহিত বাক্যযুদ্ধে প্রবৃত্ত হইবেন। তিনি সঙ্কুচিতচিত্তে কহিলেন—“ধর্ম্ম বিষয়টি অতি গভীর। আমি