পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

বুদ্ধের জীবন ও বাণী

 “কি গৃহী, কি গৃহহীন যিনিই পবিত্র ধর্ম্মভাবনার দ্বারা চিত্ত আবৃত করিয়া রাখিবেন, যিনি আপনার সমগ্র চেষ্টা ধর্ম্মসাধনায় প্রয়োগ করিবেন, যিনি সরোবরের মধ্যবর্ত্তী প্লবমান শতদলের ন্যায় সংসারের মধ্যে অনাসক্তভাবে বিচরণ করিতে পরিবেন, তিনিই নিঃসন্দেহ আনন্দ, কল্যাণ ও শান্তিলাভ করিয়া কৃতার্থ হইবেন।”

 বুদ্ধের বাণী শ্রবণ করিয়া অনাথপিণ্ডদ পরম পুলকিত হইলেন। তিনি শ্রদ্ধানম্র-চিত্তে কহিলেন—“দেব, বৌদ্ধ সাধুদের বাসের নিমিত্ত আমি শ্রাবস্তী নগরে একটি বিহার নির্ম্মাণ করিয়া দিতে ইচ্ছা করি। আমার এই প্রার্থনা পূর্ণ করিলে আমি আপনাকে কৃতার্থ জ্ঞান করিব।”

 অনাথপিণ্ডদের হৃদয় সম্পূর্ণ উদ্ঘাটিত হইয়াছিল। বুদ্ধ তাঁহার দিব্য দৃষ্টি দ্বারা এই পুণ্যব্রত ধনীর হৃদয়ের উদারতা দেখিয়া পরম আনন্দ লাভ করিলেন, তিনি তাঁহার দানগ্রহণে সম্মতি জানাইয়া বলিলেন—

 “দানশীল ব্যক্তি সর্ব্বজনপ্রিয়, তাঁহার বন্ধুত্ব অতিশয় মূল্যবান বলিয়া বিবেচিত হইয়া থাকে। মৃত্যুর পরে তাঁহাকে অনুতপ্ত হইতে হয় না বলিয়া মৃত্যুতেও তিনি আনন্দ ও শান্তি লাভ করেন। তাঁহার মঙ্গলব্রত-সম্ভূত বিকশিত পুষ্প ও রসালফল তিনি ইহলোকে ও পরলোকে লাভ করিয়া থাকেন।”

 “অনেকেই ইহা বিশ্বাস করে না যে, নিরন্নকে অন্নদান করিলেই আমাদের বলবৃদ্ধি হয়, বস্ত্রহীনকে বস্ত্রে ভূষিত করিলেই আমাদের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়, গৃহহীনদিগের জন্য গৃহনির্ম্মাণে অর্থ ব্যয় করিলেই আমাদের অর্থ বাড়িতে থাকে।”

৪৪