বুদ্ধের জীবন ও বাণী
ফিরিবার জন্য অনুরোধ করিলেন। তিনি এই অনুরোধ রক্ষা করিতে পারিলেন না; বিনীতভাবে কহিলেন—“আপনার হৃদয় স্নেহে অভিষিক্ত, আপনি আমার জন্য গভীর বেদন অনুভব করিয়া থাকেন। যে অসীম স্নেহ দ্বারা আপনি আমাকে হৃদয়ে বাধিয়া রাখিয়াছেন, সেই স্নেহ সর্ব্ব মানবের প্রতি প্রসারিত করুন, তাহা হইলে আপনি যে ক্ষুদ্র সিদ্ধার্থকে হারাইয়াছেন তাহার পরিবর্ত্তে এক বৃহত্তর সিদ্ধার্থ লাভ করিতে পরিবেন এবং নির্ব্বাণের শান্তি আপনার চিত্ত অধিকার করিবে।”
পুত্রের অমৃতময়ী বাণী শ্রবণ করিয়া শুদ্ধোদনের চক্ষু ভারাক্রান্ত হইল। তিনি অভিনবভাবে বিহ্বল হইয়া বলিলেন—“তুমি রাজ্য সম্পদ ত্যাগ করিয়া মহানিষ্ক্রমণ দ্বারা পরম মঙ্গল লাভ করিয়াছ। তুমি নির্ব্বাণের পন্থা আবিষ্কার করিয়াছ, তুমি এক্ষণে সর্ব্বজীবের নিকটে মুক্তির বাণী প্রচার কর।”
শুদ্ধোদন রাজধানীতে ফিরিলেন, বুদ্ধ নগরপুরোবর্ত্তী উদ্যানেই অবস্থান করিতে লাগিলেন।
পরদিন প্রভাতে বুদ্ধ ভিক্ষাপাত্র হস্তে নগরে বাহির হইলেন। পুত্র দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করিতেছেন, এই সংবাদ শ্রবণ করিয়া পিতা শুদ্ধোদন দ্রুতগতি তাঁহার নিকটে গমন করিলেন এবং অপ্রসন্নচিত্তে তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন—“বৎস, তুমি রাজতনয় হইয়া কেন উদরান্নের জন্য গৃহে গৃহে ভিক্ষা করিয়া স্বয়ং ক্লেশ স্বীকার করিতেছ এবং আমাদিগকে লজ্জা দিতেছ? আমি অন্নের সংস্থান করিতে পারিতাম না?” বুদ্ধ উত্তর করিলেন—“ভিক্ষা করাই আমার কুলাগত প্রথা।” শুদ্ধোদন বিস্মিত হইয়া কহিলেন—“সে কি