বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।



বুদ্ধের জীবন ও বাণী

এই অন্তিম উপদেশটির একটি স্বতন্ত্র বিশেষত্ব আছে। দুর্ভাগ্যক্রমে তাঁহার এই উপদেশটির একাংশমাত্র পাওয়া গিয়াছে এবং তাহাই মহাপরিনির্ব্বাণ-সূত্রে বর্ণিত হইয়াছে। এই উপদেশমধ্যে তিনি সাধকের জন্য চারিটি ধ্যান, চারিটি ধর্ম্মপ্রচেষ্টা, চারিটি ঋদ্ধিপাদ, পঞ্চনৈতিক বল, সপ্তবোধ্যঙ্গ ও আষ্টাঙ্গিকমার্গ নির্দ্দেশ করিয়া গিয়াছেন।

 বৈশালী হইতে বুদ্ধ সশিষ্যে কুশীনগরের অভিমুখে যাত্র করেন। পথিমধ্যে তিনি ভণ্ডগ্রাম, আম্রগ্রাম, জম্বুগ্রাম ও ভোগনগর প্রভৃতি স্থানে অবস্থান করিয়ছিলেন। মহাপ্রয়াণের পূর্ব্বে তিনি তাঁহার উদার ধর্ম্মমত শিষ্যদের মনে দৃঢ়রূপে অঙ্কিত করিয়া দিবার চেষ্ট করেন। বিচারবুদ্ধি ত্যাগ করিয়া কেহ কদাপি তাঁহার বাণী স্বীকার করে ইহা তিনি ইচ্ছা করিতেন না। তাঁহার মহাপ্রস্থানের পরে কেহ কেহ আপন আপন বাণী তাঁহার নামে চালাইবার চেষ্টা করিতে পারেন, এই আশঙ্কায় শিষ্যদিগকে তিনি বলিলেন —“যদি কেহ বলেন, আমি স্বয়ং বুদ্ধের মুখে এই বাণী শুনিয়াছি; ইহাই সত্য, ইহাই বিধি, ইহাই তাঁহার প্রদত্ত শিক্ষা; তোমরা কখনো এইরূপ উক্তির নিন্দা বা প্রশংসা করিও না। ঐ উক্তির প্রত্যেক বাক্য প্রত্যেক শব্দ অভিনিবেশ সহকারে শুনিবে; উহার তাৎপর্য্য সম্যক্‌ বুঝিবার চেষ্টা করিবে। ধর্ম্ম এবং বিনয়ের নিয়মের সহিত মিলাইয়া লইতে চেষ্টা করিবে। যদি তুলনা করিয়া দেখিতে পাও যে, ঐ উক্তির, সহিত ধর্ম্মশাস্ত্রের ও সংঘের নিয়মাবলীর কিছুতেই সামঞ্জস্য বিধান করা যায় না, তাহা হইলে বুঝিবে, ঐ উক্তি আমার নহে, কিংবা ঐ ব্যক্তি আমার বাণীর প্রকৃত তাৎপর্য্য হৃদয়ঙ্গম করিতে পারেন নাই।”

৬০