পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বুদ্ধের জীবন ও বাণী

রক্তামাশয় রোগে আক্রান্ত হইলেন। এই অসুস্থ অবস্থাতেই তিনি কুশীনগরের দিকে যাত্রা করিলেন। তিনি পরম ধৈর্য্যের সহিত প্রসন্নমুখে রোগের যাতনা সহিতেছিলেন। পথিমধ্যে একটি বৃক্ষমূলে উপবেশন করিয়া তিনি আনন্দকে কহিলেন—“আমি অবসন্ন ও ক্লান্ত হইয়া পড়িয়াছি, তুমি আমার এই গাত্রাবরণ বস্ত্রখানি চারি ভাঁজ করিয়া বিছাইয়া দাও আমি কিছুকাল বিশ্রাম করিব।” বুদ্ধ শয়ন করিয়া আনন্দকে পানীয় জল আনিবার আদেশ করিলেন। জলপানে তৃষ্ণা নিবারণ করিয়া তিনি বিশ্রাম করিতে লাগিলেন।

 এই সময়ে পুক্কসনামক এক মল্ল যুবক ঐ স্থানদিয়া যাইতেছিলেন। তিনি সাধু আড়ারকালামের শিষ্য। তরুমূলে সমাসীন বুদ্ধদেবের প্রসন্নমুখের কান্তি দেখিয়া পুক্কস বিস্মিত হইলেন। তিনি তাঁহার চরণে প্রণত হইয়া সবিনয়ে বলিলেন—“প্রভো! গৃহত্যাগী সাধুদের ধ্যানের প্রভাব কি চমৎকার, তাঁহারা কি আশ্চর্য্য মানসিক শান্তিই উপভোগ করিয়া থাকেন।” তাঁহার গুরু আড়ারকালামের অলৌকিক ধ্যানশক্তি জ্ঞাপন করিবার জন্য পুক্কস বলিলেন যে, একদা যখন তিনি ধ্যানমগ্ন ছিলেন, তখন তাঁহার অতি সন্নিকট দিয়া ঘর্ঘর শব্দ করিয়া ধুলি উড়াইয়া পাঁচ শত শকট চলিয়া গেল, তাঁহার পরিচ্ছদ ধূসরিত হইল, কিন্তু তিনি কিছুই জানিতে পারিলেন না।”

 তাঁহার কথা শ্রবণ করিয়া বুদ্ধ উল্লসিত হইয়া বলিলেন— “পুক্কস, ধ্যানের শক্তি অতি আশ্চর্য্যই বটে, মানব ধ্যানের প্রভাবে মনের মধ্যে সম্পূর্ণ সচেতন থাকিয়াও বাহিরের কিছু দেখিতে বা শুনিতে পায় না। আমি এক সময়ে ধ্যানে নিযুক্ত ছিলাম; তখন বাহিরে ভীষণ বারি-বর্ষণ, মেঘ-গর্জ্জন ও বিদ্যুৎ-স্ফুরণ হইতেছিল;

৬২