পাতা:বুয়র ইতিহাস - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২
বুয়রদিগের উৎপত্তি

দ্রুতগামী হটেণ্টট্‌দিগের বিপক্ষে পর্ত্তুগীজদিগের অস্ত্র একেবারে অকর্মণ্য হইয়া পড়ে। তাহাদিগের ধনু হইতে রাশি রাশি তীক্ষ্ণ শর সকল একত্র এত পরিমাণে আসিয়া পর্ত্তুগীজদিগের উপর পতিত হয় যে, তাঁহারা একেবারে দিগ্বিদিক্‌ জ্ঞানশূন্য হইয়া সেইন হইতে পলাইতে আরম্ভ করেন। এই ভয়ানক সমরে ৬৫ জন বলবান্ পর্ত্তুগীজ তাঁহাদিগের শাসনকর্ত্তার সহিত ধরাশায়ী হন, অবশিষ্ট যাঁহারা পলায়ন করিয়া প্রাণ বাঁচাইয়াছিলেন, তাঁহাদিগের মধ্যে কেহই অক্ষত শরীরে প্রত্যাগমন করিতে পারেন নাই।

 এই ঘটনার পর হইতেই পর্ত্তুগীজগণ দক্ষিণ আফ্রিকায় যাওয়া একেবারে বন্ধ করিয়া দিলেন। সেই সময় হইতে তাঁহাদিগের মনে বিশ্বাস জন্মিল যে, ঐ স্থানে বাণিজ্য উপযোগ বিশেষ কোনরূপ দ্রব্যাদি নাই; বিশেষতঃ নিতান্ত অসভ্য জাতির সহিত বাণিজ্যসূত্রে বদ্ধ হওয়াও সুকঠিন। ইহার পর হইতে পর্ত্তুগীজগণ সেণ্ট হেলেনা দ্বীপ ভিন্ন আফ্রিকার আর কোন স্থানে বাণিজ্য জাহাজ লইয়া যাইতেন না। ঐ দ্বীপটাও আবিষ্কৃত হইয়াছিল ১৫০২ খৃষ্টাব্দে।

 ইহার অনেক দিবস পরে ইংরাজ, ডচ্‌ ও ফরাসিগণ, পর্ত্তুগীজদিগের পন্থা অবলম্বন করিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার দিকে বাণিজ্যার্থে জাহাজ প্রেরণ করেন। ১৫৯১ খৃষ্টাব্দের জুলাই মাসে ইংরাজদিগের বাণিজ্যপোতের পতাকা ঐ স্থানের টেবেল উপসাগর (Table Bay) প্রথম দেখিতে পাওয়া যায়। কিন্তু ১৬০১ খৃষ্টাব্দ হইতে ঐ স্থান ভারতবর্ষে গমনাগমনের সময়ে এক প্রকার বিশ্রামস্থান হইয়া পড়ে।