পাতা:বৃহৎ বঙ্গ - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পালরাজত্বের নানাকথা, বাঙ্গলার অপরাপর রাজবংশ Rʻ96) “রণধীর সেনের পুত্ৰ মহারাজ হরিশ্চন্দ্র সাক্ষাৎ ধৰ্ম্মরাজের ন্যায়ই ধৰ্ম্মাত্মা ও কুবেরের ন্যায় ঐশ্বৰ্য্যশালী ছিলেন। - "তিনি পৃষ্ঠায়াপথাবলম্বী হইয়া প্ৰজাদিগকে শাসন করিতেন এবং সূৰ্য্যবংশ-প্ৰদীপ৷ হরিশ্চন্দ্রের মতই প্ৰতাপশালী ছিলেন। “স্বভাবতঃ চন্দ্র কলঙ্ক বহন করে কিন্তু ইনি ভিষিক্কুলের নিষ্কলঙ্ক পূৰ্ণচন্দ্র। এই রাজর্ষি যমুনার (যমন্সত্ৰাসিনী ?) তীরে নির্লজ্জন বৌদ্ধমূৰ্ত্তিশোভিত মঠ-মন্দিরে বাস করিতেন। ১৮ “হরিশ্চন্দ্রের পুত্র রাজর্সি মহেন্দ্ৰ,-যিনি এই কণ্টকাকীর্ণ পাৰ্বত্য হাঙ্গল চন্দনতারু নিষেবিত করিয়াছিলেন,-তিনি এই মঠ মীনাঙ্কাদিস্থিত শকে শিবের নামে উৎসর্গ করিয়াছিলেন । “ভিষক মাধবের পুত্র কবীন্দ্র শিবদাস সুগতিকে প্ৰণামপূর্বক এই শ্লোক মাস রচনা। করিলেন । শকাব্দ ( অস্পষ্ট ) ।” ༢. এখন “মীনাঙ্কাদ্রি”'র। অর্থ :-নীন = ১২, অঙ্ক= ৯, অদ্ৰি= ৭,= ১২৯৭ শক (“সপ্তকুলাচল”) = ১৩৭৫ খৃঃ অব্দ। সৰ্ব্বদাই যে অঙ্ক বাম দিক হইতে পড়িতে হইবে, এমন নয়। অঙ্কের সোজাসুজি পাঠ আমরা অনেক স্থানে পাইয়াছি, যথা ভারতচন্দ্রের সত্যনারায়ণের পাঁচালীতে “সনে রুদ্র চৌতিশা” (রুদ্র ১১ +৩৪ = ১১৩৪ বাং সন ), খেলারামের ধৰ্ম্মমঙ্গলে -“ভুবনেশকে বায়ুমাসে শরের বাহন, খেলারাম করিলেন গ্ৰন্থ আরম্ভনা” ( ১৪ ভুবন ॥৪৯ বায়ু= ১৪৪৯ শক, শরের বাহন মাস ধনু অর্থাৎ পৌষ মাস ), জয়নারায়ণকৃত কাশীখণ্ডে “মিত্ৰ শতচৌদ্দ শক” = ১৪১৪ শক, গোপালভট্ট-প্ৰণীত বল্লাল-চরিতে “অন্ধয়াজজ মানে বসুভির্বাহণরাধিকশাকেষু” = ১০১৩ শক, আনন্দভট্টের বল্লাল-জীবনীতে “শাকে চতুৰ্দশশতে মনুষ্যরদানযুতে।” (মনুষ্যদন্ত = ৩২) = ১৪৩২ শক, ar পুস্তকের অন্যত্ৰ “সহশ্ৰেংষ্ট বিংশযুতে শকাব্দে পৃথিবীপতিঃ স্ত্রীভিঃ সাদ্ধং মহাভাগাং উৎপপাতঃ দিবং প্রতি” = ১০.২৮ শক। বিষ্ণুর অবতার বলিয়াই যে মীন অর্থ সৰ্ব্বদা এক হইবে, ইহা আমরা স্বীকার করি না। জ্যোতিষিক গণনায় মীন অর্থ ১২ । আমরা সংস্কৃত কলেজের জ্যোতিষের অধ্যাপক শ্ৰীযুক্ত রাধাবল্লভ জ্যোতিস্তীর্থ মহাশয়কে এ সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করিয়াছিলাম। তিনি বলিলেন, “মীন অর্থ কখনই ‘এক” বলিয়া ধরা হয় না, সৰ্ব্বদাই উহার অর্থ ১২ ” র্যাহারা মীন অর্থ এক ধরিয়া এবং অঙ্কের বাম গতি স্বীকার করিয়া এই শ্লোকের অর্থ ৭৯১ অর্থাৎ ৮৬৯ খৃঃ অব্দ নির্ধারণ করিয়াছেন, • র্তাহাদের এ কথাটা মনে রাখিতে হইবে যে ঐ প্রশস্তি নবম শতাব্দীর হইলে উহার * আবিষ্কারক বৃদ্ধ পণ্ডিত ৬/অমৃতানন্দ গুপ্ত কখনই উহায় পাঠ উদ্ধার করিতে পারিতেন না। . ইহা নিশ্চিত যে বৌদ্ধ প্রভাব তখনও দেশে যথেষ্ট ছিল। এদিকে বানাল সেন উদীয়মান ব্ৰাহ্মণ্যধর্শের প্রধান পাণ্ড ছিলেন ; ভীমসেনের পুত্ৰগণের মধ্যে ধৰ্ম্ম লইয়া কলহ হওয়া বিছুই আশ্চৰ্যর বিষয় ছিল না। প্রশস্তিতে হৰিশ্চন্দ্র ও মহেক্স উভয়েই স্নাজাির্ষপদবাচ্য টেপল্টন সাহেব এবং নলিনীকান্ত ভট্টশালী ।