পাতা:বৃহৎ বঙ্গ - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

እ S বৃহৎ বঙ্গ তবে তাহাকে তৎক্ষণাৎ তাহান্ন সমস্ত সৈন্য বিদায় করিয়া, যুদ্ধোপকরণসমূহ সমাৰ্ট-সরকারে সমৰ্পণ করিতে হইবে ; ইহাতে কিছুমাত্র ‘অবাধ্যতা করিলে তাহাকে তাহার বাসস্থান ঠাইতে দূরে নির্বাসিত করিতে হইবে। ইহাতে যদি তিনি ষড়যন্ত্রের কোন লক্ষণ প্ৰদৰ্শন করেন, তবে তাহার দুর্গাদি ভূমিসাৎ করিয়া, তাহাকে এমন কঠোর শাস্তি দিতে হইবে যে জমিদার যেন একটা নগণ্য প্ৰজার অবস্থা প্ৰাপ্ত হন।” কিন্তু মোগলদিগের কঠোর শাসনসত্বেও বাঙ্গলার খণ্ডরাজ্যগুলির ক্ষমতা কোন কালেই একেবারে বিলুপ্ত হয় নাই । €কবরের সময়ে ভুরসুটের রাণী পাঠানদিগের সহিত তুমুল যুদ্ধ করিয়া জয়ী হইয়াছিলেন, ইনি “রায় বাঘিনী” নামে প্ৰসিদ্ধি লাভ” করিয়াছিলেন (বঙ্গবীরাঙ্গনা, বিধুভুষণ ভট্টাচাৰ্য্য প্ৰণীত, ১৫০-৫১ পৃ: ) )\ইংরেজ রাজত্বের প্রথম সময়েও মেদিনীপুরের চকলিয়ার জমিদার জীবন রায় তাহার পাইক সৈন্য দ্বারা সারজেণ্ট বাসকোম্ব প্ৰভৃতি ইংরেজ সেনাপতির অসংখ্য সিপাই হঠাইয়া দিয়া তাহদের শিবির লুণ্ঠন করিয়াছিলেন। ডবলিউ. কে. ফারমিঙ্গার লিখিয়াছেন, ‘বাঙ্গালী পাইকের পশ্চিমা সিপাই হইতে সৈন্য হিসাবে উৎকৃষ্ট’ (E. G. Galizier's Bengal District Records, Vol. 1, p. 9) i rittori3 liolitir 3 * 36পুরুষ রণবীর ছদ্ধর্ষ পাঠান দিগের খ্যাত হঠাতে এই রাজ্যটি কাড়িয লইয়াছিলেন । রাজসাহীর জমিদারের রাজ্য ভাগলপুর -র্য্যন্ত বিস্তৃত ছিল, চাকলা রাজসাহা এই অধিকারের অন্তৰ্গত ছিল এবং ইহার রাজস্ব ছিল ২৭। পক্ষ টাকা । বদ্ধমানের রাজাও খুব প্রতাপশালী ছিলেন, ইংরেজ রাজত্বের পথম যুগে ইহারা জন কোম্পানীর অনেক উদ্বেগের সৃষ্টি করিয়াছিলেন। উনবিংশ শতাব্দীতে নোয়াখালির চৌধুরীরা কিরূপ দুৰ্দান্ত ছিলেন, এবং একটি বেগম স্বয়ং যুদ্ধক্ষেত্রে নামিয়া কিরূপ অসম্ভব বীরত্বের পরিচয় দিয়াছিলেন, তাহা “চৌধুরীর লড়াই নামক পল্লীগীতিকায় বিস্তৃতভাবে বর্ণিত আছে (পূর্ববঙ্গগীতিকা, ৩য় খণ্ড, ২য় সংখ্যা ని পাঠানের সামাজ্যবাদী ছিলেন না, তাহারা সমস্ত দেশটার খুটিনাটি খবর রাখিয়া প্ৰত্যেক দেশের উপর বিজয়চিহৎ অঙ্কিত করিয়া পদানত করিতে চাহিতেন না । তঁহার এদেশে বাস করিয়া কতকটা এদেশের লোকের সঙ্গে এক হইয়া গিয়াছিলেন। হিন্দু জমিদারেরা এবার বুঝিয়াছিলেন যে, মোগলের দেশের প্রকৃত স্বাধীনতা হরণ করিতে আসিয়াছেন-এজন্য তাহারা জীবনপণে বাধা দিলা ছিলেন। এই ভূঞা রাজাদের অনেকেরই সমস্ত বঙ্গদেশের আশিকারের উপর লোলাপী দৃষ্টি ছিল। ঈশা খা, কেদার রায় প্রভৃতি অনেকেই সেই স্বপ্ন দেখিয়াছিলেন, কিন্তু প্ৰেতাপাদিত্যই বোধ হয় সর্বাপেক্ষা অধিকতর অগ্রসর হইয়াছিলেনপ্ৰতাপে কেহ তঁহাকে আঁটিয়া উঠিতে পারে নাই, এবং “ভয়ে যত স্থপতি দ্বারস্থ” হইতেন। এদিকে উত্তরে ত্রিপুরার ধষ্ঠ মাণিক্য এবং পশ্চিমে বনবিষ্ণুপুরের বীর হাৰীয় মুসলমানদের সঙ্গে আড়াআড়ি করিয়া বঙ্গদেশে অধিকার বাড়াইতে চেষ্টত ছিলেন। ঈশা খাঁর বংশধর দেওয়ান ফিরোজ খাঁ যে মোগল সমাটের অধীনতা-পাশ হইতে মুক্ত হইবার জন্য সৰ্ব্বস্ব পণ করিয়া দাড়াইয়াছিলেন, তাহা বঙ্গীয় একটি পল্লীগীতিকায় বিস্তারিতভাবে উল্লিখিত আছে (পূর্ববঙ্গগীতিকা, ২য় খণ্ড, ২য় সংখ্যা, ৪৩৫-৭৮ পৃঃ)। ཀ་ kJና