পাতা:বেতালপঞ্চবিংশতি.pdf/৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৪৬
বেতালপঞ্চবিংশতি
৪৬

প্রস্থান করিলেন। রাজধানীতে উপস্থিত হইলে প্রজাগণ অতিশয় আনন্দিত হইল। রাজা প্রতাপমুকুট বধূসহিত পুত্ত্র পাইয়া আনন্দপ্রবাহে মগ্ন হইয়া নগরে মহোৎসবের আদেশ করিলেন।

এই রূপে আখ্যায়িকা সমাপন করিয়া বেতাল জিজ্ঞাসা করিল মহারাজ রাজা ও মন্ত্রিপুত্ত্র এ উভয়ের মধ্যে কোন্ ব্যক্তি নিরপরাধে রাজকুমারীর বসপ্রেষণজন্য দুরদৃষ্টভাগী হইবেন। বিক্রমাদিত্য কহিলেন আমার মতে রাজা। বেতাল কহিল কি নিমিত্তে। রাজা কহিলেন শাস্ত্রকারেরা আততায়ী ব্যক্তির বধ ও বিদ্রোহাচরণে দোষাভাব লিখিয়াছেন। অতএব বিষপ্রদায়িনী রাজকন্যার প্রতি এরূপ প্রতিকূলতাচরণে মন্ত্রিপ্রত্ত্রকে দোষী বলিতে পারা যায় না। কিন্তু রাজা যে অজ্ঞাতকুলশীল ব্যক্তির বাক্যে বিশ্বাস করিয়া প্রমাণাত্তরনিরপেক্ষ ও বিচারবিমুখ হইয়া অপত্যস্নেহ বিস্মরণপূর্ব্বক অকৃতাপরাধে কন্যাকে বনবাস দিলেন ইহাতে তাঁহার রাজধর্ম্মবিরুন্ধ কর্মের অনুষ্ঠানজন্য পাপস্পর্শ হইতে পারে।

ইহা শুনিয়া বেতাল পূর্ব্বপ্রতিজ্ঞা অনুসারে শ্মশানে গিয়া পূর্ব্ববৎ বৃক্ষে লম্বমান হইল। রাজাও তাহার পশ্চাৎ পশ্চাৎ ধাবমান হইয়া তাহাকে বৃক্ষ হইতে অবতারণপূর্ব্বক স্কন্ধে করিয়া সন্ন্যাসীর আশ্রমাভিমুখে চলিলেন।