পাতা:বেদান্তগ্রন্থ - রামমোহন রায়.pdf/২৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় অধ্যায় : তৃতীয় পাদ RRO এই উপাসনাকে তাহারা সেই সেই দেবতার উপাসনারূপে অবশ্যই স্বীকার করিবেন । জনসাধারণের মধ্যে যাহারা উপাসক তাহাদিগকে রামমোহন এইভাবে নিজের সঙ্গে মিলিত করিয়াছেন। জনসাধারণের যাহারা উপাসনানিষ্ঠ নহেন, তাহদের সঙ্গেও আত্মবৎ ব্যবহার করিতে রামমোহন উপদেশ দিয়াছেন। তিনি লিখিয়াছেন, যাহাতে আপনার বিস্ত্র ও পরের অনিষ্ট না হইয়া স্বীয় ও পরের অভীষ্ট জন্মে, তদনুরূপ ব্যবহার করিতে যত্ন করিবেন। রামমোহন সকলকে আত্মবৎ গ্রহণ করিতেন, তাই জনসাধারণকে মুখ্য উপাসনার অন্তভুক্ত করিয়াছেন। রামমোহন ৫৩ সূত্রে বর্ণিত উপাসনাকে মুখ্য উপাসনা বলিয়াছেন। অন্যত্র বলিয়াছেন। পরব্রহ্ম বিষয়ে জ্ঞানের আবৃত্তিকে উপাসনা কহি। এই দুই উক্তির মধ্যে প্ৰভেদ কি ? উত্তর এই, দ্বিতীয় বাক্যে জ্ঞানের আবৃত্তিই বলা হইয়াছে, সেই জ্ঞানের স্বরূপ বলা হয় নাই ; ৫৩ ও ৫৪। সুত্রে সেই জ্ঞানের স্বরূপ উপদিষ্ট হইয়াছে ; এই জ্ঞানের আবৃত্তিতে ব্ৰহ্মলাভ সুনিশ্চিত। সেই জ্ঞানের আকার এই প্রকার ; সুষুপ্তিতে জীবাত্মা ব্রহ্মে শয়ন করে ; তখন সে যেন লয়প্রাপ্তই হয়। পুনরায় সে ব্ৰহ্ম হইতেই জাগিয়া উঠে ; তখন ব্ৰহ্মই তার ইন্দ্ৰিয় সকলকে স্ব স্ব কর্মে প্ৰবৃত্ত করিয়া সর্বদেহে অবস্থান করেন। পূর্বোক্ত দুই সুত্রে এই তত্ত্ব ব্যাখ্যা করিয়াছেন। এই তত্ত্বে উপদিষ্ট জ্ঞানের পুনঃ পুনঃ আবৃত্তিই মুখ্য উপাসনা। ছাঃ ৮৩, ৪ মন্ত্রে এই তত্ত্ব বিবৃত হইয়াছে। প্ৰথম অধ্যায়ের তৃতীয় পাদের ১৯ ও ২০ সূত্রের ব্যাখ্যায়। এই তত্ত্ব আলোচিত হইয়াছে। রামমোহন ব্ৰহ্মলাভের কত প্ৰকার সাধনার উল্লেখ কারিয়াছেন ? প্ৰাচীনপন্থী সাধকের ত্বং পদার্থ ও তৎ পদার্থের শোধন করেন। ইহা এক সাধনা । বেদান্তগ্রন্থের তৃতীয় অধ্যায়ের দ্বিতীয় পদে ইহার আলোচনা আছে; ইহা প্ৰথম প্রকার সাধনা। রামমোহন মাণ্ডক্য উপনিষদের ভূমিকাতে অপর প্ৰকার সাধনার উল্লেখ করিয়াছেন। সাধারণ ব্ৰাহ্মসমাজ কর্তৃক প্ৰকাশিত রামমোহনের উপনিষদের উপক্ৰমণিকায় সেই সাধনার আলোচনা আছে। তৃতীয় প্রকারের সাধনার উল্লেখ এই স্থানে করিয়াছেন। চতুর্থ আর এক সাধনার উল্লেখ রামমোহন বেদান্তসারে করিয়াছেন। তাহা যথাসময়ে আলোচিত হইবে। বেদে কহিতেছেন আত্মার উপকার নিমিত্ত অপর বস্তু প্ৰিয়