পাতা:বেলা অবেলা কালবেলা - জীবনানন্দ দাশ.pdf/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩২ : তোমরা তো উনিশ শো অনন্তের মতন সুগম। আলো নেই? নরনারী কলরোল আলোর আবহ প্রকৃতির ? মানুষেরও ; অনাদির ইতিহাসসহ । প্রয়াণপটভূমি বিকেলবেলার আলো ক্রমে নিভছে আকাশ থেকে। মেঘের শরীর বিভেদ ক'রে বর্শাফলার মতো সূর্যকিরণ উঠে গেছে নেমে গেছে দিকে-দিগন্তরে ; সকলি চুপ কী এক নিবিদ প্রণয়বশত। কমলা হলুদ রঙের আলো—আকাশ নদী নগরী পৃথিবীকে স্বর্য থেকে লুপ্ত হয়ে অন্ধকারে ডুবে যাবার আগে ধীরে-ধীরে ডুবিয়ে দেয় –মানবহৃদয়, দিন কি শুধু গেল ? শতাব্দ কি চ'লে গেল !—হেমন্তের এই আঁধারের হিম লাগে ; চেনা জানা প্রেম প্রতীতি প্রতিভা সাধ নৈরাজ্য ভয় ভুল সব-কিছুকেই ঢেকে ফেলে অধিকতর প্রয়োজনের দেশে মানবকে সে নিয়ে গিয়ে শান্ত—আরো শান্ত হতে যদি অনুজ্ঞা দেয় জনমানবসভ্যতার এই ভীষণ নিরুদ্দেশে,— আজকে যখন সাত্বনা কম, নিরাশ ঢের, চেতন কালজয়ী হতে গিয়ে প্রতি পলেই আঘাত পেয়ে অমেয় কথা ভাবে,— আজকে যদি দীন প্রকৃতি দাড়ায় যতি যৱনিকার মতে শান্তি দিতে মৃত্যু দিতে ;–জানি তবু মানবতা নিজের স্বভাৰে কালকে ভোরের রক্ত প্রয়াস সূর্যসমাজ রাষ্ট্রে উঠে গেছে ; ইতিহাসের ব্যাপক অবসাদের সময় এখন, তবু, নরনারীর ভিড় নব নবীন প্রাকৃসাধনার ;–নিজের মনের সচল পৃথিবীকে ক্রেম্‌লিনে লণ্ডনে দেখে তবুও তারা আরো নতুন অমল পৃথিবীর।