পাতা:বেলা অবেলা কালবেলা - জীবনানন্দ দাশ.pdf/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেখা যেত; এক আধ মুহূর্ত শুধু—সে-অভিনিবেশ ভেঙে ফেলে সময়ের সমুদ্রের রক্ত ভ্ৰাণ পাওয়া গেল –ভতিশব্দ রীতিশব্দ মুক্তিশব্দ এসে আরো টের পটভূমিকার দিকে দিগন্তরে ক্রমে মানবকে ডেকে নিয়ে চ'লে গেল প্রেমিকের মতো সসন্ত্রমে ; তবুও সে প্রেম নয়, স্বধা নয়,—মানুষের ক্লান্ত অন্তহীন ইতিহাস-আকুতির প্রবীণত ক্রমায়াত করে সে বিলীন ! আজ এই শতাব্দীতে সকলেরই জীবনের হৈমন্ত সৈকতে বালির উপরে ভেসে আমাদের চিন্তা কাজ সংকল্পের তরঙ্গ কঙ্কাল দ্বীপসমুদ্রের মতো অস্পষ্ট বিলাপ করে তোমাকে আমাকে অন্তহীন দ্বীপহীনতার দিকে অন্ধকারে ডাকে । কেবলি কল্লোল আলো—জ্ঞান প্রেম পূর্ণতর মানবহৃদয় সনাতন মিথ্যা প্রমাণিত হয়ে—তবু-উনিশ শো অনন্তের জয় হয়ে যেতে পারে, নারি, আমাদের শতাব্ধীর দীর্ঘতর চেতনার কাছে আমরা সজ্ঞান হয়ে বেঁচে থেকে বড় সময়ের সাগরের কুলে ফিরে আমাদের পৃথিবীকে যদি প্রিয়তর মনে করি প্রিয়তম মৃত্যু অবধি – সকল আলোর কাজ বিষঃ জেনেও তবু কাজ করে—গানে গেয়ে লোকসাধারণ করে দিতে পারি যদি আলোকের মানে। ৩৬ : নারীসবিতা আমরা যদি রাতের কপাট খুলে ফেলে এই পৃথিবীর নীল সাগরের বারে প্রেমের শরীর চিনে নিতাম চারিদিকের রোদের হাহাকারে,— হাওয়ায় তুমি ভেসে যেতে দখিণ দিকে—যেইখানেতেযমেরদুয়ারআছে ; অভিচার বাতাসে বুক লবণ-বিলুষ্ঠিত হলে আবার আমার কাছে উৎরে এসে জানিয়ে দিতে পাখিদেরও—শাদা পাখিদেরও স্খলন আছে।