পাতা:বেলা অবেলা কালবেলা - জীবনানন্দ দাশ.pdf/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পৃথিবী হুধকে ঘিরে পৃথিবী স্বর্যকে ঘিরে ঘুরে গেলে দিন আলোকিত হয়ে ওঠে—রাত্রি অন্ধকার হয়ে আসে ; সর্বদাই, পৃথিবীর আহ্নিক গতির একান্ত নিয়ম, এই সব ; কোথাও লঙ্ঘন নেই তিলের মতন আজো ; অথবা তা হতে হলে আমাদের জ্ঞাতকুলশীল মানবীয় সময়কে রূপান্তরিত হয়ে যেতে হয় কোনো দ্বিতীয় সময়ে ; সে-সময় আমাদের জন্তে নয় আজ । রাতের পরের দিন–দিনের পরের রাত নিয়ে সুশৃঙ্খল পৃথিবীকে বলয়িত মরুভূমি ব’লে মনে হতে পারে তবু ; শহরে নদীতে মেঘে মানুষের মনে মানবের ইতিহাসে সে অনেক সে অনেক কাল শেষ ক’রে অনুভব করা যেতে পারে কোনো কাল শেষ হয় নি কে তবু –শিশুরা অনপনেয় ভাবে কেবলি যুবক হল,—যুবকেরা স্থবির হয়েছে, সকলেরি মৃত্যু হবে,—মরণ হতেছে। অগণন অঙ্কে মানুষের নাম ভোরের বাতাসে উচ্চারিত হয়েছিল শুনে নিয়ে সন্ধ্যার নদীর জলের মুহূর্তে সেই সকল মানুষ লুপ্ত হয়ে গেছে জেনে নিতে হয় ; কলের নিয়মে কাজ সাঙ্গ হয়ে যায় ; কঠিন নিয়মে নিরঙ্কুশভাবে ভিড়ে মানবের কাজ অসমাপ্ত হয়ে থাকে,—কোথাও হৃদয় নেই তবু । কোথাও হৃদয় নেই মনে হয়, হৃদয়যন্ত্রের ভয়াবহভাবে সুস্থ সুন্দরের চেয়ে এক তিল অবাস্তর আনন্দের অশোভনতায় । ইতিহাসে মাঝে-মাঝে এ-রকম শীত অসারতা নেমে আসে ;–চারিদিকে জীবনের শুভ্র অর্থ রয়ে গেছে তবু, রৌদ্রের ফলনে সোনা নারী শস্য মানুষের হৃদয়ের কাছে,