বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ - রাজেন্দ্রলাল আচার্য (১৯২৫).pdf/১১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ
১০৫

য়ুরোপ থেকে এসেছেন? আমাকে য়ুরোপের কথা বলুন—ফ্রান্সের কথা বলুন। আমি পাঁচ বৎসর ফ্রান্সের নাম শুনি নাই।”

 “আপনি এতদিন ধরে' এই রাক্ষসদের মধ্যে বাস করছেন?”

 “ওদেরও ত মুক্তির উপায় করতে হ’বে। ওরা অজ্ঞ অসভ্য বর্ব্বর। কিন্তু ওরাও আমাদের ভাই।”

 ফার্গুসন্ পাদরীর নিকট ফ্রান্সের গল্প করিতে লাগিলেন। জো তাঁহার জন্য চা প্রস্তুত করিয়া দিল। বহুদিন পর চা পান করিয়া মুক্ত পবনে মুক্ত গগনে ভাসিতে ভাসিতে তাঁহার মনে হইতে লাগিল যেন শরীরে শক্তি ফিরিয়াছে। তিনি শয়ন করিয়াছিলেন, উঠিয়া বসিলেন এবং সকলের সহিত কর মর্দ্দন করিলেন। কহিলেন—

 “আপনারা খুব সাহসী পর্য্যটক। এমন অসম্ভব পর্য্যটনকেও আপনারা সম্ভব করে’ তুলতে পেরেছেন। আবার আপনারা হর্ষে গৌরবে স্বদেশের মুখ দেখতে পাবেন। আত্মীয়-স্বজনদের সহাস্যবদন দেখে পরিতৃপ্ত হ’তে পারবেন, আপনাদের—”

 পাদরী আর কথা কহিতে পারিলেন না। এতই দুর্ব্বল হইয়া পড়িলেন যে, সকলে ধরাধরি করিয়া তাঁহাকে সাবধানে শয্যার উপর স্থাপন করিলেন। ফার্গুসন্ বুঝিলেন, সেই শীর্ণ দেহের ভিতর যে প্রাণ স্পন্দিত হইতেছিল, তাহার শেষ সময় নিকটবর্ত্তী হইতেছে। তিনি পুনরায় রোগীর ক্ষতগুলি ধৌত করিয়া দিলেন, তাঁহার উষ্ণদেহে শীতল বারি সিঞ্চন করিলেন;