সঙ্গে যে অধিক জল ছিল না সেদিকে ভ্রূক্ষেপও করিলেন না। বহুক্ষণ পর পাদরীর জ্ঞান-সঞ্চার হইল। তিনি ধীরে ধীরে আত্মকাহিনী বর্ণনা করিতে লাগিলেন। বলিলেন—
“ব্রিটানি প্রদেশের আরাডন নামক ক্ষুদ্র গ্রামে আমার বাস। আমরা বড় দরিদ্র। বিশ বৎসর বয়সের সময় আমি গৃহ ত্যাগ করে’ এই বান্ধবহীন আফ্রিকায় এসেছি। কতবার বাধার পর বাধা এসে আমার যাত্রাপথ রোধ করে’ দাঁড়িয়েছে। তৃষ্ণা ক্ষুধা শ্রান্তি রোগ কিছুতেই আমাকে নিবৃত্ত করতে পারে নাই। ধীরে ধীরে অগ্রসর হ’তে হ’তে আমি এতদূর পর্যন্ত এসেছি।” পাদরী একটি দীর্ঘশ্বাস ত্যাগ করিয়া বলিতে লাগিলেন—
“ন্যাম্বরা জাতির কাফ্রিগণ বড় নিষ্ঠুর। তাদের কাছে আমি অপরিসীম যাতনা পেয়েছি। গ্রাম্যকলহে লিপ্ত হ’য়ে ন্যাম্বরাগণ যখন আমাকে ত্যাগ করেছিল, তখন আমি প্রত্ত্যাবর্তন করলে করতে পারতেম। কিন্তু মনে হলো এদের মধ্যে ধর্ম্ম প্রচার করাই আমার কর্তব্য। তাই আর ফিরলেম না, ক্রমেই সম্মুখে অগ্রসর হ’তে লাগলেম। কাফ্রিরা মনে করলে আমি একটা পাগল। যতদিন তাদের এ ধারণা ছিল, ততদিন আমি অনেকটা শান্তিতেই ছিলাম। আমি এদের ভাষা শিখেছি। বারাফ্রি সম্প্রদায় ন্যাম্ন্যাম্ জাতির মধ্যে সর্ব্বাপেক্ষা নিষ্ঠুর ও হিংস্র। আমি অনেকদিন থেকে এদের মধ্যেই কাটাচ্ছিলেম। ওদের সর্দ্দার কয়েকদিন হ’লো মরে’ গেছে।