আকাশ পরিচ্ছন্ন। চারিদিকে অন্ধকার। ঊর্দ্ধে অসংখ্য ভাস্কর নক্ষত্ররাশি তখন জ্বলিয়া জ্বলিয়া নিবিতেছিল, কদাচিৎ দুই একটি বৃহৎ উল্কা তাহার যাত্রা-পথটি আলোকিত করিয়া আকাশের এক প্রান্ত হইতে অন্য প্রান্তে ছুটিয়া যাইতেছিল। বিপুল জল-ভঙ্গরব চারিদিকের ভীষণ নিস্তব্ধতা ভঙ্গ করিতেছিল। জো পুত্তলিকাবৎ ডোঙ্গার উপর বসিয়া রহিল। গভীর রাত্রে ডোঙ্গা অকস্মাৎ তীরে প্রহত হইবামাত্র জো এক লম্ফে নামিল। নামিয়াই দেখিল, একটি প্রকাণ্ড বৃক্ষ ইতস্ততঃ শাখা-প্রশাখা বিস্তার করিয়া প্রেতের ন্যায় দণ্ডায়মান রহিয়াছে। জো বৃক্ষারোহণ করিল।
প্রভাতে সে যাহা দেখিল, তাহাতে তাহার দেহের শোণিত জল হইয়া গেল—হস্তপদ অবসন্ন হইয়া আসিল। সর্ববশরীর কণ্টকিত হইয়া উঠিল। জো দেখিল, বৃক্ষের শাখায় শাখায় শত শত সর্প দুলিতেছে! পত্রে পত্রে অসংখ্য জলৌকা ও অন্যান্য কীট নির্ব্বিবাদে অবস্থান করিতেছে। জো’কে দেখিয়া সর্পগুলি দুলিয়া দুলিয়া গর্জ্জন করিতে লাগিল— কখনো বা ফণা বিস্তার করিয়া চতুর্দ্দিকে চাহিতে লাগিল। জো কাল বিলম্ব না করিয়া নিম্নে লম্ফ দিয়া পড়িল। দেখিল, অগণিত সরিসৃপ কিল্ বিল্ করিয়া চলা ফেরা করিতেছে—কতক বা তখনো কুণ্ডলাকারে ঘুমাইতেছে।
অজ্ঞাত অপরিচিত বনাকীর্ণ দেশ। পথহীন। জো ধীরে অতি সাবধানে অগ্রসর হইতে লাগিল। ক্রমে মধ্যাহ্ন