আর তাহার কথা ফুটিল না। জো মুচ্ছিত হইয়া ফার্গুসনের ক্রোড়ে পতিত হইল।
জোর তখন প্রায় নগ্নাবস্থা। বহু ক্ষত-মুখে রুধির ঝরিয়া তাহার বাহু ও দেহ সিক্ত করিতেছিল। ফার্গুসন্ জো’র চিকিৎসায় নিযুক্ত হইলেন। সমস্ত রজনী বিশ্রাম ও শুশ্রূষার পর প্রভাতে জো যখন সুস্থ হইল, তখন তাহার আত্মকাহিনী বর্ণনা করিতে লাগিল। আমরা সে কাহিনীর অনেকটা জানি। কর্দ্দম মধ্যে পতিত হইয়া জো যখন ক্রমেই প্রোথিত হইতেছিল, আমরা সেই সময় তাহাকে ত্যাগ করিয়াছিলাম। সেই পর্য্যন্ত বর্ণনা করিয়া জো বলিতে লাগিল—
“আমি যখন ক্রমেই ডুবে’ যেতে লাগলেম, তখন সকল আশা ভরসা দূর হ’লো! মৃত্যু যে সুনিশ্চিত, এটা বেশ বুঝতে পারলেম! উঃ—কি ভয়ানক মৃত্যু! অকস্মাৎ দেখলেম, আমার নিকটেই এক গাছি রজ্জু পড়ে’ আছে। আমি প্রাণের দায়ে তাই ধরলেম। টেনেই দেখি তার অপর প্রান্ত দৃঢ় রূপে আবদ্ধ। একটা অবলম্বন পেয়ে প্রাণপণ শক্তিতে সেই রজ্জু ধরে’ টানতে লাগলেম। শেষে অনেক পরিশ্রমের পর তারই সাহায্যে শুষ্ক কঠিন ভূমির উপর উঠলেন। তখন দেখি যে, রজ্জুর সঙ্গে আমাদের বেলুনের নোঙ্গর বাঁধা।”
কেনেডি বলিলেন—“সেই নোঙ্গর, ফার্গুসন্! সেই যে আমরা টেনে তুলতে না পেরে কেটে দিয়াছিলাম। তারপর—তারপর?”