বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ - রাজেন্দ্রলাল আচার্য (১৯২৫).pdf/১৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ত্রয়োবিংশ পরিচ্ছেদ
১৭৯

 “বেলুনের নোঙ্গর আমার হৃদয়ে সাহস এনে দিল। শরীরে যেন শক্তি আবার ফিরে এল। আমি বেশ বুঝলেম এ বিপদ্ থেকে মুক্তি পাব। আমি সেই রাত্রেই পদব্রজে যাত্রা করলেম। নিবিড় বন। শ্বাপদ-সঙ্কুল। কণ্টকে চরণ বিদ্ধ হ’তে লাগলো। অবশিষ্ট পরিচ্ছদ ছিন্ন হয়ে গেল, দেহ ক্ষত বিক্ষত হতে লাগলো। এক একবার মনে হ’তে লাগলো আর বুঝি যেতে পারবো না। এমনি করে’ রাত্রি প্রভাত হ’লো। প্রভাতে দেখি যে নিকটেই একটা স্থানে কতকগুলো ঘোড়া ঘাস খাচ্ছে। কাল বিলম্ব না করে’ আমি তারই একটার পিঠে লাফিয়ে, উঠলেম। অশ্ব নক্ষত্র বেগে উত্তর মুখে ছুটতে লাগলো। কোথায় যাচ্ছি—কোথায় পথ কিছুই জানি না। দেখতে দেখতে কত গ্রাম কত প্রান্তর কত কানন পার হ’য়ে এলাম। আমার তখন দিগ্বিদিক্ জ্ঞান ছিল না। ঘোড়াটা আমাকে নিয়ে একটা মরুভূমির মধ্যে এলো। মরুক্ষেত্র দেখে ভয় হ’লো, ভরসাও হ’লো। ভাবলেম, এই মুক্ত মরুর মধ্যে যদি বেলুন আসে ত সাক্ষাৎ হবে।”

 “সকাল থেকে প্রায় ৩ ঘণ্টাকাল ঘোড়ায় এসে, যখন মরুভূমির ভিতর দিয়ে যাচ্ছি, তখন অকস্মাৎ একদল আরবের সঙ্গে সাক্ষাৎ। আমাকে দেখেই তারা মনে করলে মস্ত এ একটা শিকার জুটেছে। আমার অনুসরণ করলে। কেউ বা বর্শা ছুঁড়ে আমাকে আঘাত করলে। মিঃ কেনেডি, আপনি একজন শিকারী —কিন্তু সে যে কি ভীষণ মৃগয়া, তা’ আপনি বুঝতে পারবেন না!”