প্রভাতে তাঁহারা টিম্বাক্টুর ৬০ মাইল উত্তরে নাইগার নদীর তীরে আসিয়া উপনীত হইলেন। দেখিলেন, অনেকগুলি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দ্বীপ নাইগারকে বহু শাখা-প্রশাখায় বিভক্ত করিয়া রাখিয়াছে। বেলুন প্রবল বায়ুর প্রভাবে ক্রমেই দক্ষিণমুখে যাইতে লাগিল। উপরে উঠিয়া নিচে নামিয়া ফার্গুসন্ অনেক চেষ্টা করিলেন, কিন্তু অনুকূল বায়ু পাইলেন না। কেবল খানিকটা গ্যাস নষ্ট হইল। এইরূপে আরো দুই দিন কাটিল। জেল্লে, ফেগো প্রভৃতি নগর পার হইয়া তাঁহারা নাইগার ও সেনেগালের মধ্যবর্ত্তী প্রদেশে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। মাঙ্গোপার্কের সঙ্গীদিগের মধ্যে অনেকেই এই স্থানে মৃত্যুমুখে পতিত হইয়াছিল। ফার্গুসন্ স্থির করিলেন, কিছুতেই এই শত্রুপূর্ণ অস্বাস্থ্যকর স্থানে নামিবেন না—অনেক উপর দিয়া ভাসিয়া যাইবেন। কিন্তু বেলুন নামিতে লাগিল।
ফার্গুসন্ বেলুন হইতে নানাবিধ অনাবশ্যক এবং কিছু কিছু আবশ্যক দ্রবাদি নিক্ষেপ করিয়া উহাকে হালকা করিলেন। বেলুন উপরে উঠিল বটে, দুই চারিটি গিরিশৃঙ্গও অতিক্রম করিল বটে, কিন্তু আবার নামিতে লাগিল।
কেনেডি ব্যস্ত হইয়া বলিলেন—“বেলুনে কি ছিদ্র হয়েছে?”
“না ডিক্, ছিদ্র নয়। উত্তাপে গাটাপার্চা গলে গেছে। রেসমের আবরণের ভিতর দিয়া গ্যাস বেরিয়ে যাচ্ছে। জিনিষপত্র ফেলে দিয়ে বেলুনকে হাল্কা করতে না পারলে গিরিশৃঙ্গগুলি অতিক্রম করার আর উপায় দেখি না।”