বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ - রাজেন্দ্রলাল আচার্য (১৯২৫).pdf/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪
বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ

 “কখনো না। আফ্রিকার পূর্ব্ব থেকে পশ্চিম প্রান্ত পর্য্যন্ত না যেয়ে আর আমি বেলুনটাকে ছাড়ছি না। বেলুন থাকলে সবই সম্ভব হ'বে। আর না থাকলে, বুঝতেই পারছ—অন্যের দশাও যা’ হয়েছে আমাদেরও তাই হ’বে। বেলুনে গেলে সুবিধা কত। ঝড় বৃষ্টি পশু পক্ষী, এমন কি নরখাদক মানুষ— কিছুতেই ভয় নাই। এই ধর না—যখন খুব গরম বোধ হ'বে, বেলুন নিয়ে উপরে উঠে যাব। যদি উপরে বেশী শীত লাগে নেবে আসব। সম্মুখে যদি দুরারোহ গিরিশৃঙ্গ বাধে অনায়াসে তার চূড়ার উপর দিয়ে উড়ে চলে’ যাব। দুরতিক্রম্য নদনদীই বল, আর দারুণ ঝড়-তুফানই বল—কিছুতেই আমাদের গতি রোধ করতে পারবে না। কত সুবিধা দেখ দেখি। ভ্রমণে ক্লান্তি নাই, বিশ্রামের জন্যও চিন্তা নাই। আমরা কত কত নূতন জনপদের উপর দিয়ে অনায়াসে ভেসে চলে যাব—বেগশালী বায়ুপ্রবাহে গা ঢেলে দিয়ে নক্ষত্রবেগে অগ্রসর হ'ব। ভাবো দেখি একবার—কখনো মেঘের আড়ালে, কখনো বা ভূপৃষ্ঠ থেকে দু’চার হাত মাত্র উপর দিয়ে—যখন যেমন সুবিধা, তখন তেননি করে’ চলে’ যাব—আর অপরিজ্ঞাত আফ্রিকার নগ্ন দৃশ্যাবলী যেন সজীব হ'য়ে আমাদের চরণতলে নেচে বেড়াবে।

 ফার্গুসনের উৎসাহ ও উদ্দীপনা ক্রমেই কেনেডির হৃদয় অধিকার করিতেছিল বটে, কিন্তু যখনই তিনি মানস-নয়নে নীল—আকাশ-গাত্রে মেঘমালার অন্তরালে উড্ডীয়মান বেলুন দর্শন করিতেছিলেন, তখনই তাঁহার মস্তক ঘুরিয়া উঠিতেছিল। তিনি যুগপৎ