যুক্তি, সকল তর্ক বৃথা হইল; তখন ডিক্ বন্ধুর দুইখানি হস্ত ধরিয়া কাকুতি মিনতি করিলেন। ফার্গুসনের সঙ্কল্প তাহাতেও টলিল না। ডিক্ ক্রমেই বন্ধুর জন্য চিন্তিত হইতে লাগিলেন। তিনি প্রতিদিন ঘুমঘোরে স্বপ্ন দেখিতে লাগিলেন যেন বেলুন বহু উচ্চে উঠিয়াছে, তিনি সেই মহাশূন্য হইতে ভূমিতলে পতিত হইতেছেন! এইরূপ স্বপ্ন দেখিতে দেখিতে সত্য সত্যই তিনি দুইবার শয্যা হইতে কক্ষতলে পতিত হইয়া কপালে আঘাত প্রাপ্ত হইলেন।
ফাগুসন্ বন্ধুর পতন-কাহিনী শুনিয়াও অবিচলিতই রহিলেন এবং গম্ভীরভাবে বলিলেন,
“তোমার ভয় নাই ডিক্, আমরা বেলুন থেকে কিছুতেই পড়বো না।”
“কিন্তু যদি পড়ি।”
“আমরা পড়বই না।”
কেনেডি নিরুত্তর হইলেন। ফার্গুসন যে তাঁহার কথা আদৌ গ্রাহ্য করিলেন না, সে জন্য দুঃখিত হইলেন। বেলুনযাত্রার কথা বলিতে হইলেই ফাগুসন্ সবর্বদা বলিতেন, “আমরা যাব”, “আমাদের বেলুন” “আমাদের আয়োজন” ইত্যাদি। তিনি কখনই একবচনান্ত “আমি” বা “আমার” পদ ব্যবহার করিতেন না। চিন্তাক্লিষ্ট কেনেডি সে জন্যও ক্রমেই ভীত হইয়া উঠিতে লাগিলেন। ভাবিলেন, বুঝি ফার্গুসনের সঙ্গে আমাকেও শেষে যাইতে হইবে। কিন্তু তাঁহার হৃদয় বলিল—'কিছুতেই না।'