বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ - রাজেন্দ্রলাল আচার্য (১৯২৫).pdf/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চম পরিচ্ছেদ
৩১

ধরে’ আকাশে উড়ে বেড়াতে হ’বে, তা’ হ'লে আপনারা ভুল বুঝেছেন। জান্‌জিবার থেকে সেনেগাল নদী বড় বেশী হ’লেও ৪০০০ হাজার মাইল হ'বে। এ পথটুকু যেতে বেলুনের ৭ দিনের বেশী লাগবে না।”

 “তা’ হ’তে পারে, কিন্তু অতদ্রুত গেলে দেশটার ত কিছু দেখা হ'বে না।”

 “যদি বেলুন আমার আজ্ঞাকারী হয়। যদি আমি আপন ইচ্ছা মত আরোহণ অবরোহণ করতে পারি, তা’ হ'লে আর ভাবনা কি! যেখানে দরকার নামবো—যেখানে আবশ্যক, নীল আকাশ ভেদ করে’ উপরে উঠে পড়বো। উপরে যখন বড় বেশী জোরে বাতাস চল্‌বে তখন ত নেমে আসতেই হ’বে।”

 জাহাজের অধ্যক্ষ কহিলেন, “উপরে উঠলে প্রায়ই প্রবল বায়ু-স্রোতই পাবেন। শুনেছি কখনো কখনো এত জোরে ঝড় বয় যে, ঘণ্টায় প্রায় ২৪০ মাইল চলে। কিন্তু বেলুন কি অত ঝড়ের মুখে টিকে থাক্‌তে পারে?”

 “কেন পারবে না? খুব পারে। নেপোলিয়নের রাজ্যাভিষেকের সময়—সেই ১৮০৪ সালেই—এমন হয়েছিল। রাত্রি ১১টার সময় প্যারিসে বেলুন ছেড়ে পর্য্যটক ভার্গোরিন্ পরদিন প্রভাতেই ব্রাসিয়ানা হ্রদে পতিত হয়েছিলেন।”

 কেনেডি কথা শুনিয়া ক্রমেই ভীত হইতেছিলেন। শুল্ক কণ্ঠে কহিলেন, “বেলুনের যেন ঢের সয়, তাই বলে’ কি আর বেলুন— যাত্রীরও ততটা সইবে! হাড়-গোড় ভেঙ্গে চূরমার হ’য়ে যাবে না?”