বর্ব্বর জাতিতে পরিপূর্ণ অজ্ঞাত দেশে এই দুঃসাহসিক পর্য্যটকদিগের অদৃষ্টে না জানি কত বিপদ্ই লিখিত রহিয়াছে। যদি বেলুন না চলে, তাহাদের হস্তে নিপতিত হইলে না জানি কি দর্দশাই ঘটিবে। ডাক্তার ফার্গুসনের ললাটে চিন্তার রেখা পর্য্যন্ত ছিল না। তিনি নিশ্চিন্ত চিত্তে নানা বিস্ময়কর কাহিনী বর্ণনা করিয়া বন্ধুদিগকে প্রফুল্ল করিতে চেষ্টা করিতে লাগিলেন। সবই বৃথা হইল—সান্ধ্য বিদায়ভোজের আনন্দ কেহই অনুভব করিতে পারিলেন না।
পরদিন প্রভাতে যখন তাঁহারা জাহাজ হইতে কুম্বেনী দ্বীপে অবতরণ করিলেন, তখন মন্দপবনে দুলিয়া দুলিয়া বেলুন বায়ুমধ্যে ভাসিতেছিল। নাবিকগণ বেলুনের বন্ধন-রজ্জু ধরিয়া টানিয়া রাখিয়াছিল। যাত্রার কাল আগত হইল। কেনেডি তখন অগ্রসর হইয়া বন্ধু ফার্গুসনের করমর্দন পূর্বক কহিলেন—
“ভাই তবে তুমি নিশ্চয়ই যাবে।”
“এখনো কি সন্দেহ আছে ডিক্? আমি নিশ্চয়ই যাব।”
“তোমাকে প্রতিনিবৃত্ত করিতে আমার যতদূর সাধ্য তা’ করেছি।”
“করেছ বৈ কি।”
“তবে আর আমার দোষ নাই। হয়েছে। আমার মন এখন স্থির হয়েছে। চল আমিও তোমার সঙ্গেই যাব।”
ফার্গুসনে্র মুখমণ্ডল উজ্জ্বল হইয়া উঠিল। তিনি হর্ষোৎফুল্ল হইয়া কহিলেন, “আমি আগেই জানতেম যে তুমি যাবে।”