ফার্গুসন্ বক্তার মঞ্চোপরি আরোহণ করিবামাত্রই আনন্দকোলাহল বাড়িয়া উঠিল। তিনি হস্তদ্বারা ইঙ্গিত করিয়া সকলকে শান্ত হইতে বলিলেন এবং পরক্ষণেই দক্ষিণ হস্তের তর্জ্জনি উর্দ্ধে উত্তোলন করিয়া কহিলেন—“ভগবানের ইচ্ছা পূর্ণ হোক।”
তাঁহার এই একটা কথায় শ্রোতৃমণ্ডলী যেরূপ উত্তেজিত হইয়া উঠিল, কব্ডেন বা ব্রাইটের শত বক্তৃতাতেও সেরূপ কখনো হয় নাই। যিনি এক মুহূর্ত্তে সহস্র লোকের হৃদয় অধিকার করিয়া ফেলিলেন, তিনি কে? ফার্গুসনের পিতা ইংরাজ-নৌসেনা-বিভাগের একজন সাহসী সেনাধ্যক্ষ ছিলেন। বালক পুত্রকে লইয়া তিনি সাগরে সাগরে পরিভ্রমণ করিতেন। তাহাকে লইয়াই জলযুদ্ধে গমন করিতেন—শত বিপদের মধ্যেও পুত্রকে সর্ব্বদা সঙ্গে রাখিতেন। পুত্র তখন হইতেই বিপদ্কে তুচ্ছ জ্ঞান করিতে শিখিয়াছিল। বালক ফার্গুসন্ বয়ঃপ্রাপ্ত হইয়া দিবারাত্রি ভ্রমণকাহিনী পাঠ করিতেন। পর্যটকদিগের শত-সহস্র বিপদ্ মানস-নয়নে দর্শন করিয়া উৎকণ্ঠিত হইতেন, আবার তাঁহাদিগের অপূর্ব্ব উদ্ধার-কৌশল দেখিয়া পুলকিত হইতেন। ভাবিতেন তেমন অবস্থায় পতিত হইলে তিনিও নিশ্চয়ই আরো সহজ উপায়ে উদ্ধার লাভ করিতে পারিতেন। পুত্রের মনোগত ভাব বুঝিয়া পিতা তাহাকে বল-বিজ্ঞান, জলতত্ত্ব, পদার্থবিদ্যা, জ্যোতিষ, ভৈষজ্যতত্ত্ব প্রভৃতি শিক্ষা দিয়াছিলেন।
পিতার মৃত্যুর পর ফার্গুসন্ সৈনিকের ব্রত গ্রহণ করিয়া