পাতা:বৈকুন্ঠের উইল - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈকুণ্ঠের উইল So ছেলে তোমার কখনও জজিয়তি পাবে কি না, বাঁড়িয্যেমশায়ের মত সে ভরসা তোমাকে দিতে পারলুম না ; কিন্তু আমার অবর্তমানে, গোকুলের ওপর যে তোমরা নিৰ্ভয়ে ভর দিতে পারবে, সে আমি তোমাকে নিশ্চয় বলে দিচ্চি। স্বামীর অবিদ্যমানতার কথায় ভবানীর চোখের কোণ এক মৃত্যুর্তেই আদ্র হইয়া উঠিল। বলিলেন, সে আমি জানি । কিন্তু গোকুল যে বডড সোজা মানুষ-ও কি তোমার ব্যবসার ঘোরপ্যাচাই বুঝতে পারবে ? ওকে হয় তা সবাই ঠকিয়ে নেবে। বৈকুণ্ঠ হাসিয়া কহিলেন, সবাই ঠকাবে না। তবে কেউ কেউ ঠকিয়ে নেবে, সে কথা সত্য। তা নিক, কিন্তু ও ত কারুকে ঠকাবে না ? তা হলেই হবে। মা লক্ষ্মী ওর হাতে আপনি এসে ধরা দেবেন। বলিতে বলিতে বৈকুণ্ঠের নিজের চোেখও সজল হইয়া উঠিল। তিনি নিজেও খাটি লোক, কিন্তু মূলধনের অভাবে অনেকদিন অনেক কষ্টই ভোগ করিয়াছেন। এখন যদি বা কিছু সংগ্ৰহ হইয়াছে, কিন্তু সময়ও ঘনাইয়া আসিয়াছে। সে শক্তি-সামর্থ্যও আর নাই। তাড়াতাড়ি চােখের উপর হাতটা বুলাইয়া লইয়া হাসিয়া বলিলেন, গিল্পী, এই বয়সে গোকুল যত লোভ কাটিয়ে বেরিয়ে এসেচে, সে যে কত শক্ত, তা তুমি হয় তা বুঝতে পারবে না। যে এ পারে, তার ত ব্যবসার ঘোর-প্যাচ চৌদি আনা শেখা হয়ে গেছে । শুধু বাকি দুটাে আনা আমি তাকে শিখিয়ে দিয়ে যাব। কিন্তু লোকে কি বলবে ? লোকের কথা তা জানি নে ছোটবে। আমি শুধু আমাদের