পাতা:বৈকুন্ঠের উইল - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
পরিভ্রমণে চলুন অনুসন্ধানে চলুন
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&S বৈকুণ্ঠের উইল যে চিনতে পারা যায় না, তাহার জীবন্ত প্ৰমাণ এই গোকুল মজুমদার। শুধু তাহার চক্ষেই সে ধূলি প্ৰক্ষেপ করিতে পারে নাই। কারণ পাড়ার সমস্ত ছেলে-বুড়ো মেয়ে-পুরুষ যখন একবাক্যে গোকুলকে ন্যায়নিষ্ঠ ভ্রাতৃবৎসল, ধৰ্ম্মরাজ যুধিষ্ঠির বলিয়া চীৎকারে গগন বিদীর্ণ করিয়াছে, তখন তিনিই শুধু চুপ করিয়া হাসিয়াছেন, আর মনে মনে বলিয়াছেন, আরে, সৎমার ছেলে বৈমাত্র ভাই।--তার ওপর এত টান! বেদে পুরাণে যা কস্মিনকালে কখনো ঘটে নি, তাই হবে এই ঘোর কলিকালে। সুতরাং এতদিন তিনি শুধু মুখ বুজিয়া কৌতুক দেখিতেছিলেন, কাহাকেও কোন কথা বলেন নাই। আবশ্যক কি ! বেশ জানিতেন একদিন সমস্ত প্ৰকাশ পাইবেই ! / এখন দেখ তোমরা-এই এত ভালো, অত ভালো, গোকুলের সম্বন্ধে যা আমি বরাবর ভেবে এসেচি, ঠিক তাই কি না ! কিন্তু কি এতদিন তিনি ভাবিয়া আসিয়াছিলেন, তাহা কাহার ও কথন জানা ছিল না, তখন সকলেই নীরবে তাহার প্ৰতিজ্ঞ স্বীকার করিয়া লইতে হইল এবং দেখিতে দেখিতে ‘ খড়ের আগুনের মত কথাটা মুখে মুখে প্রচার হইয়া গেল। অথচ গোকুল টের পাইল না যে, বাহিরের বিরুদ্ধে আন্দোলন তাহার বিপক্ষে এত সম্বর এরূপ তীব্ৰ হইয়া উঠিল। ভবানী চিরদিনই অল্প কথা কহিতেন। তাহাতে কাল রাত্রি হইতে ব্যথার ভারে তাহার হৃদয় একেবারেই স্তব্ধ হইয়া গিয়াছিল। গোকুলের স্ত্রী মনোরমা এক সময়ে স্বামীকে নির্জনে