পাতা:বৈকুন্ঠের উইল - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈকুণ্ঠের উইল 8. আর আমার কিছু দরকার নেই। তুই শুধু আলোটা জেলে দিয়ে শুগে যা। আহা ! চোখ মুখ বসে গিয়ে একেবারে কালিবগ্ন হয়ে গেছে। গোকুলের চোখ দুটি ছল ছল করিয়া উঠিল। কহিল, তা আর হবে না ? তুই বলিস কি হাবুর মা, বাবা মারা গেলেন, ছোড়া একবার চোখের দেখাটা দেখতে পেলে না-একটা পয়সার বিষয়-আশয় পৰ্য্যন্ত পেলে না।--তার মনে মনে যা হচ্ছে, তা সেই জানে ! বাবাকে সে কি ভালই বাসত, তা তোরা সব জানিস? কি বলিস। হাবুর মা ? বলিতে —বলিতেই গোকুলের চোখের কোণে জল আসিয়া পড়িল। হাবুর মা অনেক দিনের দাসী । চোখের জল দেখিয়া তাহার চোখেও জল আসিল। গাঢ়স্বরে কহিল, তা আর বলতে বড়বাবু! তেনার বাবা-অন্ত প্ৰাণ ছিল যে! তবে কি না বড় বড় লেখাপড়া করতে করতে মগজটা কেমনধারা যে গরম হয়ে গেল-তাই গোকুল হাবুর মাকে একেবারে পাইয়া বসিল। কহিল, তাই বল না হাবুর মা ! মগজটা গরম হবে না ?দ্ধি বিদ্যেটা কি সে কম শিখেচে! অনার গ্রাজুয়েটু! বলি, এই হুগলি-চুচড়োবাবুগঞ্জে কটা লোক আমার ভায়ের মত বিদ্যে শিখেচে-কই দেখিয়ে দে দেখি ? লাটসাহেব নিজে এসে যে তাকে হাত ধরে ধসায়-সে কি একটা হেজি-পেজি মানুষ! তুই তা ঝি, কিন্তু কলকাতায় গিয়ে কোন ভদ্রলোককে বল গে। দেখি যে, তুই বিনোদবাবুদের বাড়ির দাসী ! তোকে ডেকে নিয়ে বসিয়ে হাজারটা খবর নেবে, তা জানিস? কিন্তু ঐ যে কথায় বলে গায়ের যুগী ভিক্ষে পায় না ! এখানকার কোন ব্যাটা কি তারে