8> বৈকুণ্ঠের উইল বিনোদ কহিল, আমার আবশ্যক কি ? আমি বাইরের লোক, দুদিনের জন্য এসেছি-দুদিন পরেই চলে যাব। গোকুল কহিল, চলে যাবে ? বিনোদ বলিল, যেতেই তা হবে । তা ছাড়া এ সব টাকাকড়ির ব্যাপার। আমি দীন-দুঃখী, হিসাব মিলিয়ে দিতে না পারলে চোর বলে তখন আপনিই হয় তা আমাকে পুলিশের হাতে দিয়ে জেল খাটিয়ে ছাড়বেন। জবাব দিবার জন্য গোকুলের ঠোঁট দুটা একবার কঁাপিয়া উঠিল মাত্র। তার পর হেট হইয়া চাবি এবং কাগজটা তুলিয়া লইয়া বাহির হইয়া গেল। পিতৃশ্ৰাদ্ধে জাক-জমক করিয়া নাম কিনিবার ইচ্ছা তাহার মনের ভিতর হইতে মরীচিকার মত মিলাইয়া গেল । অথচ আজ সকাল হইতেই তাহার উৎসাহ এবং চেঁচামেচির বিরাম ছিল না। সহসা সন্ধ্যার পরেই সে আসিয়া যখন তাহার কম্বলের শয্যাশ্রয় করিয়া শুইয়া পড়িল, তাহার স্ত্রী ঘরে ঢুকিয়া আতিশয় বিস্মিত হইল। তোমার কি অসুখ করচে ? গোকুল উদাসভাবে কহিল, না, বেশ আছি। তবে, আমন করে শুলে যে ? গোকুল জবাব দিল না। মনোরম পুনরায় প্রশ্ন করিল, ঠাকুরপোর সঙ্গে কথা-টথা কিছু হ’ল ? গোকুল কহিল, না। তখন বড়বন্ধু অদূরে মেঝের উপর বেশ করিয়া আসন গ্ৰহণ 8
পাতা:বৈকুন্ঠের উইল - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫৩
অবয়ব