পাতা:বৈকুন্ঠের উইল - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ο বৈকুণ্ঠের উইল বঁড়িয্যেমশাই ভয়ে ভয়ে বলিলেন, তা হ’লে রায়মশায়ের কি রকম হবে ? গোকুল কহিল, উনি বাড়ি যান। মা কোনমতেই ওঁকে এখানে রাখতে চান না। আর চাকুরি ছাড়ায় ক্ষতি যা হয়েচে, সে আমি মাকে জিজ্ঞেস করে পাঠিয়ে দেব। বলিয়া কাহারও উত্তরের জন্য অপেক্ষা মাত্র না করিয়া প্ৰস্থান করিল। সবাই মনে করিয়াছিল, এতবড় অপমানের পর , রায়মশাই আর তিলাৰ্দ্ধ অবস্থান করিবেন না। কিন্তু আট-দশ দিন কাটিয়া গেল-এই মনে করার বিশেষ কোন মূল্য দেখা গেল না। বোধ করি বা কন্যা-জামাতার প্রতি অসাধারণ মমতাবশতঃই তিনি ছোট কথা কানে তুলিলেন না এবং সরজমিনে উপস্থিত। থাকিয়া অহৰ্নিশ তাহদের হিতচেষ্টা করিতে লাগিলেন । কিন্তু এই হিতাকাজক্ষার প্রবল দাপটে একদিকে গোকুল নিজে যেমন পীড়িত ও সংক্ষুব্ধ হইয়া উঠিতে লাগিল, ওদিকে বাটীর মধ্যে ভবানীও তেমনি প্রতি মুহুর্তেই অতিষ্ঠ হইয়া উঠিতে লাগিলেন। বধূ ও তাহার পিতার পরিত্যক্ত শব্দভেদী বাণ খাইতেশুইতে-বসিতে র্তাহার দুই কানের মধ্যে দিয়া অবিশ্রাম বুকে বিধিতে লাগিল । সেদিন তিনি আর সহ্য করিতে না পারিয়া বধুমাতাকে ডাকিয়া বলিলেন, বৌমা, গোকুল কি চায় না যে, আমি বাড়িতে থাকি ? বৌমা জবাব ইচ্ছা করিয়াই দিল না-মাথা হেঁট করিয়া নখের কোণ খুঁটিতে লাগিল। ভবানী কিছুক্ষণ স্থির থাকিয়া