পাতা:বৈকুন্ঠের উইল - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

oS দশমীর পর একাদশী গেল, দ্বাদশীও গেল, মাকে পাঠাইবার মত তিথি নক্ষত্ৰ গোকুলের চোখে পড়িল না। ত্ৰয়োদশীর দিন বাটির পুরোহিত নিজে আসিয়া সুদিনের সংবাদ দিবামাত্র গোকুল অকারণে গরম হইয়া কহিল, তুমি যার খাবে, তারই সৰ্ব্বনাশ করবে ? যাও, নিজের কাজে যাও, আমি মাকে কোথাও যেতে দিতে পারব না । মনোরম সেদিন ধমক খাইয়া অবধি নিজে কিছু বলিত না, আজ সে তাহার পিতাকে পাঠাইয়া দিল। নিমাই আসিয়া কহিলেন, এটা ত ভাল কাজ হচ্ছে না। বাবাজী! গোকুল কোনদিন খবরের কাগজ পড়ে না, কিন্তু আজ পড়িতে বসিয়াছিল। কহিল, কোনটা ? বেয়ানঠাকরুণ তঁর নিজের ছেলের বাসায় যখন স্ব-ইচ্ছায় যেতে চাচ্চেন, তখন আমাদের বাধা দেওয়া ত উচিত হয় না। গোকুল পড়িতে পড়িতে কহিল, পাড়ার লোক শুনলে আমার আখ্যাতি করবে। নিমাই অত্যন্ত আশ্চৰ্য্য হইয়া বলিলেন, আখ্যাতি করবার আমি ত কোন কারণ দেখতে পাই নে। Y গোকুল শ্বশুরকে এতদিন মান্য করিয়াই কথা কহিত । আজি হঠাৎ আগুন হইয়া কহিল, আপনার দেখবার ত কোন প্ৰয়োজন দেখি নে। আমার মাকে আমি কারু। কাছে পাঠাব। না-বাস, সাফ কথা ! যে যা পারে আমার করুক।