পাতা:বৈকুন্ঠের উইল - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ENS) বৈকুণ্ঠের উইল যাইত। তার মুখে ভবানী গোকুলের নূতন সংসারের কাহিনী শুনিতে পাইলেন, কিন্তু ভাল-মন্দ কোন কথা কহিলেন না। সেদিন আসিবার সময় সেই যে গোকুল গাড়ীর কাছে দাড়াইয়া রুদ্ধকণ্ঠে বলিয়াছিল, তঁহাদের সমস্ত সম্বন্ধের এই শেষ, তখন নিজের অভিমানের কথাটা তিনি গ্ৰাহ করেন নাই। কিন্তু একমাস কাল যখন কাটিয়া গেল, গোকুল তঁহার সংবাদ লইল না, তখন তিনি মনে মনে দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিলেন । সে যে সত্য সত্যই তঁহাকে ত্যাগ করিবে, ছোটভাইকে এমন করিয়া ভুলিয়া থাকিবে, এত কাণ্ড, এত রাগারগির পরেও সে কথা নিঃসংশয়ে, বিশ্বাস করিতে পারেন নাই। তাই আজ হাবুর মার মুখে ঘরের মধ্যে তাহার শ্বশুর-শাশুড়ীর দৃঢ় প্রতিষ্ঠার বার্তা পাইয়া তিনি শুধু স্তব্ধ হইয়াই রহিলেন। নূতন বাসায় আসিয়া দুই-চারিদিন মাত্র বিনোদ সংযত ছিল, তারপরেই সে স্বরূপ প্ৰকাশ করিল। মায়ের কোন তত্ত্বই প্ৰায় সে লাইত না ; রাত্রে বাড়িতে থাকিত না ; সকালে যখন ঘরে আসিত, তখন দুঃখে লজ্জায় ভবানী তাহার প্রতি চাহিতে পারিতেন না । এই মাত্ৰ শুনিয়াছিলেন, সে চাকরী করে। কিন্তু কি চাকরি, কত মাহিনা, কিছুই জানিতেন না। সুতরাং এখন এইটাই তাহার একমাত্র সান্তনা ছিল যে, আর যাই হোক, তিনি ছেলেকে বিষয় হইতে বঞ্চিত করিবার নিমিত্ত হইয়া অন্যায়। করেন নাই, কারণ গোকুল স্ত্রী-শ্বশুর-শাশুড়ীর প্রভাবে তঁহাদের প্রতি যত অন্যায়ই করুন, সে স্বামীর এত দুঃখের