পাতা:বৈকুন্ঠের উইল - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R আমার মা ভবানী কই গো ? বলিয়া লাঠির গোটা-দুই ঠোকা দিয়া ইস্কুলের ষষ্ঠ শিক্ষক জয়লাল বঁড়িয্যে সেইদিন সন্ধ্যাকালেই বৈকুণ্ঠ মজুমদারের বাড়ির ভিতরে আসিয়া দাড়াইলেন। তিনি বৈকুণ্ঠের গোলদারী দোকানে চাল-ডাল-ঘি-তেল বাবদে অনেক টাকা বাকি ফেলিয়া গৃহিণীকে মাতৃ-সম্বোধন করিয়াছিলেন । ভবানী সন্ধ্যার কাজকৰ্ম্ম সারিয়া বারান্দায় মাদুর পাতিয়া ছেলে দুটিকে কোলের কাছে লইয়া বসিয়াছিলেন। শশব্যান্তে উঠিয়া আসন পাতিয়া দিলেন। বঁড়িয্যেমশাই উপবেশন করিয়াই সুরু করিয়া দিলেন, হাঁ, রত্নগৰ্ভা বটে। মা তুমি ! ছেলে পেটে ধরেছিলে বটে ! এত ছোকরার মধ্যে তোমার বিনোদ একেবারে ফাষ্ট । একেবারে ডবল প্রমোশন । ওর নম্বর পাওয়া দেখে হেড মাষ্টার মশাইয়ের পর্য্যন্ত তাক লেগে গেছে। আজ তাকেও গালে হাত দিয়ে দাড়াতে হয়েছে ! আমিও তা মা, এই ছেলে চরিয়েই বুড়ো হলুম ; কিন্তু তোমার এই বিনোদ ছেলেটির মত ছেলে কখনও চোখে দেখলুম না। আমি এই বলে যাচ্ছি। আজ, ও ছেলে তোমার হাইকোটের জজ হবে-হবেই হবে। ভবানী চুপ করিয়া রহিলেন। বঁড়িয্যেমশাই উৎসাহিত হইয়া বলিতে লাগিলেন, আর এই গোকলো ! কিসে আর কিসে ! এ ছোড়া এত বড় গাধার সর্দার মা, একজামিনের দিন আমিই তা ছিলুম। এদের পাহারায়-কত ছেলে টেবিলের নিচে