পাতা:বৈকুন্ঠের উইল - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈকুণ্ঠের উইল ar কহিতে লাগিল, এমন বড়ভাই কি কারু হয় ছোটবাবু ? মুখে কেবল বিনোদ আর বিনোদ। আমার বিনোদের মত পাশ কেউ করে নি, আমার বিনোদের মত লেখাপড়া কেউ শেখে নি, আমার বিনোদের মত ভাই কারু জন্মায় নি। লোকে তোমার নামে কত অপবাদ দিয়েচে ছোটবাবু, আমার কাছে এসে হেসে বলেন, চক্কোত্তিমশাই, শালারা কেবল আমার ভায়ের হিংসে করে দুনাম রটায় ! আমি তাদের কথায় বিশ্বাস করব, আমাকে এমনি বোকাই ঠাউরেচে। শালারা । একটু থামিয়া কহিল, এই সেদিন কে এক কাশীর পণ্ডিত ঐসে তোমার মন ভাল করে দেবে বলে একশ-আট সোণার তুলসীপাতার দাম প্ৰায় পাঁচশ টাকা বড়বাবুর কাছে হাতিয়ে নিয়ে গেছে। আমি কত নিষেধ করুলুম, কিছুতেই শুনলেন না ; বললেন, আমার বিনোদের যদি সুমতি হয়, আমার বিনোদ যদি এম-এ পাশ করে—যায় যাক আমার পাঁচশ টাকা । বিনোদ চােখ মুছিয়া ফেলিয়া আৰ্দ্ধস্বরে কহিল, কত লোক যে আমার নাম ক’রে দাদাকে ঠকিয়ে নিয়ে যায়, সে আমিও শুনেছি চক্কোত্তিমশাই । চক্ৰবৰ্ত্তী গলা খাটাে করিয়া কহিল, এই জয়লাল বঁড়িয্যেই কি কম টাকা মেরে নিয়েছে ছোটবাবু! ওই ব্যাটাই ত যত নষ্ট্রের গোড়া। বলিয়া সে কৰ্ত্তার মৃত্যুর পরে সেই ঠিকানা বাহির করিয়া দিবার গল্প করিল। ভবানী কোন কথায় একটি কথাও কহেন নাই--শুধু তঁরই দুই চোখে শ্রাবণের ধারা বহিয়া যাইতেছিল।