পাতা:বৈজ্ঞানিক সৃষ্টিতত্ত্ব - অক্ষয়কুমার চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভুমিক স্বাধীন চিন্তার জন্য ভারত চির প্রসিদ্ধ। অতি প্রাচীন কালে যখন ভারতে ৩৩টী বা ৩৩ কোটী দেবতার : উপাসনা ও ক্রিয়াবহুল যাগ যজ্ঞাদির অনুষ্ঠানের প্রভূত প্রচার ছিল, সে সময়েও পতঞ্জলি খাষি ‘ঈশ্বর প্রণিধানাবা, সাদ্দা-দর্শন প্রণেতা কপিল ঋষি "ঈশ্বরাসিদ্ধে:* “প্রমাণাভাবাৎ”, চাৰ্বাক ঋষি “ন স্বর্গে নাপবর্গে বা নৈবাত্মা পার লৌকিক:। নৈব বর্ণাশ্রমাদীনাং ক্রিয়াশ্চ ফলদায়িকা: ।” ইত্যাদি । সনাতন ধৰ্ম্ম বিরুদ্ধ বাক্য সকল উক্তি করিতে কুষ্ঠ বোধ করেন নাই। পরবর্তী যুগে যৎকালে পৌরাণিক দেবদেবীর মূর্তিপূজার বহুল প্রচার হইয়াছিল সে সময়েও আভানক, বৌদ্ধ, জৈন প্রভৃতি বেদবিরুদ্ধ মত সকল প্রচারিত হইয়াছিল। এই সকল মতে জগৎ স্বভাব হইতে উৎপন্ন । স্বাভাবিক যে যে গুণ আছে, তৎবশত: দ্রব্য সংযুক্ত হইয়া সমস্ত পদার্থ উৎপন্ন হইয়াছে। জগতের কেহ কৰ্ত্তা নাই । ইহার । পরলোক ও জীবাত্মা স্বীকার করেন ; চাৰ্বাক কিন্তু তাহাও করেন না। স্বাধীনমত প্রচার সম্বন্ধে হিন্দু-ভারত যেরূপ উদারতা দেখাইয়াছেন, খ্ৰীষ্টিয়ান ইউরোপ সেরূপ দেখাইতে পারেন নাই। সেখানে যখনই কেহ। কোন যুক্তিসঙ্গত স্বাধীনমত প্রচার করিতে উঠত হইয়াছিলেন, তাহাকে প্রচলিত মতের বিরোধী বলিয়া নানা রূপ নিগ্ৰহ ছেগ করিতে হইয়াছিল ; কাহারও বা প্রাণদওও হইয়াছিল। বৰ্তমান কালে সভ্যতার উন্নাত ও বিজ্ঞান-দ্বারা নব নব তথ্য । সকল আবিষ্কৃত হওয়ায়, ইউরোপের জনসাধারণের মধ্যে আর সেরূপ গোড়ামী দৃষ্ট হয় না। এক্ষণে তথায় সকলেই নিঃশঙ্কচিত্তে নিজ নিজ স্বাধীন-মত প্রচার করিতেছেন। {-