পাতা:বোধিসত্ত্বাবদান-কল্পলতা (তৃতীয় খণ্ড).pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

|o এইরূপে অপায় বিষয়-জলধিতে মগ্ন বিষয়াসক্ত ভ্ৰষ্ট পুরুষের পঙ্কে মগ্ন কুঞ্জরের ন্যায় কিংকৰ্ত্তব্য-জ্ঞানরহিত মোহমুচ্ছ উদিত হয়। সে কতিপয় দিন স্থায়ী যৌবন দ্বারা অন্ধভাব প্রাপ্ত হয় । ১৬। যুবা পুরুষ এইরূপে যাবৎকাল আনন্দে ভ্রমণ করিয়া বেড়ায়,প্রীত হয়, জুস্তাদ্বারা সুখ প্রকাশ করে এবং নানাপ্রকার মুখভঙ্গী ও অঙ্গভঙ্গী করিয়া সহাস্তবদনে কথা কহে, এই সময়মধ্যেই কালপ্রযুক্ত জরা অলক্ষিতভাবে তাহার উপর অসিয়া পড়ে এবং তাহার দেহে যেন হিমরাশি ঢালিয়া দেয় । ১৭ । এক ক্ষণ এক ক্ষণ করিয়া কত কাল কাটিয়া গেল । আমি মোহনিদ্রার বশীভূত হইয়। এই দেহ দ্বারা কোন সুকৃতি সম্পাদন করি নাই, দান বা ভোগ কিছুই করি নাই । পুরুষ অস্তকালে এইরূপ চৌরকর্তৃক মুষিত ব্যক্তির ন্যায় দুঃখবশতঃ চিন্তা করে । মোহপ্রাপ্ত জনের প্রমাদ এইরূপ অবসাদযুক্ত ও অনুতাপ-ফল হইয়া থাকে। ১৮। ললিত-বনিতারূপ পুষ্প-শোভিত, বল্লী-বিরাজিত বসস্ত কালের এই যৌবন দুষ্কৰ্ম্মার্জিত ধনের ন্যায় অপগত হইলে তখন উহা স্বপ্নদর্শনের ন্যায় বোধ হয়। তখন সমস্ত দুঃস্বভাব নষ্ট হয় এবং সকল অঙ্গ খেদ প্রাপ্ত হইয়া বিরক্ত হয়। তখন পুরুষ রাজ্যভ্রষ্ট রাজার স্যায় অতীত সুখের অনুশোচনা করে । ১৯ । আয়ুষ্কাল বৃথা কাৰ্য্যে অতিবাহিত করা হইয়াছে। সমুচিত কাৰ্য্য কিছুই করি নাই । যাচককে কিছু প্রদান করি নাই । চতুদিকে যশো বিস্তার করা হয় নাই । সৎপথ চিনিতে পারি নাই । নিজে চাহিয়া বিষ পান করিয়াছি । কত তাপ ও কত শীত ভোগ করিয়াছি । কোনপ্রকার পাপে ভয় করি নাই । যাহা ইচ্ছ, তাহাই করিয়াছি । ২০ । সুবর্ণময় ব্লক্ষের ন্যায় মনোহর সে যৌবন-শ্ৰ এখন কোথায় গেল ? সে দেহ কোথায় গেল ? এই দেহ এখন কৃমিহত বৃক্ষের স্যায় কান্তিহীন