পাতা:বৌদ্ধধর্ম - সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SSV বৌদ্ধধৰ্ম্ম এই প্রশ্নের উত্তরে গুটিকতক কথা বলা আবশ্যক। যদিও জাতিভেদ প্রথা উন্মুলিত করিয়া হিন্দু সমাজ ভাঙ্গিয়া ফেলা বুদ্ধদেবের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল না, তথাপি ইহা বলা যাইতে পারে যে, বর্ণবিচার তাহার সমাজের পত্তন-ভূমি নহে- ব্ৰাহ্মণ ক্ষত্ৰিয়াদি শ্রেষ্ঠ বর্গের ন্যায় নীচ বর্ণের লোকেও ভিক্ষু সঙ্ঘে প্ৰবেশের অধিকারী। বুদ্ধদেব একস্থানে বলিয়া গিয়াছেন, “হে ভিক্ষুগণ—যেমন গঙ্গা যমুনা মহী অচিরাবতী প্ৰভৃতি নদনদী, যেমনই হউক না কেন, সাগরে প্রবেশ করিয়া নিজ নিজ পুরাতন নাম ধান হারাইয়া একই সাগর নাম ধারণ করে, তেমনি যখন ব্ৰাহ্মণ ক্ষত্ৰিয় বৈশ্য শূদ্র চতুর্বর্ণ আমার বিধানানুসারে গৃহত্যাগী হইয়া সন্ন্যাসধৰ্ম্ম গ্ৰহণ করে, তখন তাহারা পূর্ব বংশ-মৰ্যাদা পূর্ব নাম পরিত্যাগ করিয়া শাক্যপুত্রীয় ভিক্ষু নামেই অভিহিত হয়।” রাজা অজাতশত্রুকে সন্ন্যাসধৰ্ম্মের উপদেশ প্ৰদান কালে বুদ্ধ বলিতেছেন—“যদি কোন রাজভৃত্য বা অনুচর গৈরিক বসন পরিধান পূর্বক কায়মনোবাক্যে শুদ্ধাচারী হইয়া ভিক্ষুবৃত্তি অবলম্বন করে, হে রাজন, তখন কি তুমি বলিবে এ আমার ভূতা-আমার সম্মুখে দাড়াইয়া কথা কহিবে-প্ৰণতভাবে আমার আজ্ঞাধীন থাকিবে-সকল সময় আমার কথামত চলিবেআমার সেবা-তৎপর থাকিবে ?” রাজা উত্তর করিলেন, “প্ৰভো! তাহা নহে-আমিই র্তাহার নিকট প্ৰণত হইব-তাহাকে বসিবার আসন দিব-তাহাকে অন্ন বস্ত্ৰ ঔষধ পথ্য যখন যাহা আবশ্যক তাহা দান করিব-ইির্তাহার সকল অভাব মোচন করিয়া, যাহাতে তিনি সর্বতোভাবে সুরক্ষিত থাকেন তাহার উপায় বিধান করিব।”