পাতা:বৌদ্ধধর্ম - সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৌদ্ধধৰ্ম্ম t Novo জগন্নাথের প্রতিরূপ চিত্রিত হয়। জগন্নাথের ত্ৰিমূৰ্ত্তি, রথযাত্ৰা, বিষ্ণুপঞ্জীর প্রবাদ, বৰ্ণবিচার পরিহার ইত্যাদি অনেক বিষয়ে বৌদ্ধভােব প্রচ্ছন্ন দেখা যায়। শ্ৰীক্ষেত্রে বর্ণবিচার পরিত্যাগ হিন্দুধৰ্ম্মের অনুগত নয়-সাক্ষাৎ বৌদ্ধ-আদর্শ হইতে গৃহীত বলিলে বলা যায়। হুয়েন সাং উৎকলের পূর্ব-দক্ষিণ প্ৰান্তে সমুদ্রতটে চরিত্রপুর নামে একটি সুপ্ৰসিদ্ধ বন্দর দেখিয়া, যান। ঐ চরিত্রপুরই এইক্ষণকার পুরী বোধ হয়। উহার নিকটে পাচটি অত্যুন্নত স্তুপ ছিল । কনিংহাম সাহেব অনুমান করেন তাহারই একটি জগন্নাথের মন্দির । খৃষ্টাব্দের দ্বাদশ শতাব্দীতে যখন বৌদ্ধের অত্যন্ত অবসন্ন হইয়া পড়িয়াছিল, তখন এই মন্দির প্রস্তুত হয়। স্তুপের মধ্যে বুদ্ধদেবের অন্তি কেশ প্রভৃতি দেহাবশেষ সমাহিত থাকে, ইহার দেখাদেখি জগন্নাথের বিগ্ৰহ মধ্যে বিষ্ণুপঞ্জর অবস্থিত, এইরূপ এক প্ৰবাদ রাটিয়া গিয়াছে। शैन পরিব্রাজক ফাহিয়ান ভারতে তীর্থযাত্রার সময় পথিমধ্যে তাতার দেশের অন্তৰ্গত খোটান নগরে একটি বৌদ্ধ মহোৎসব সন্দর্শন করেন, তাহাতে এক রথে তিনটি প্ৰতিমূৰ্ত্তি দেখিয়া আসেন। মধ্যস্থলে বুদ্ধ মূৰ্ত্তি ও তাহার দুই পার্শ্বে দুইটি বোধিসত্ত্বের প্রতিমূৰ্ত্তি সংস্থাপিত ছিল। জগন্নাথের রথযাত্রা সম্ভবতঃ খোটানস্থ বৌদ্ধদিগের রথযাত্রার অনুকরণ, এবং জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রা বৌদ্ধত্ৰিমূৰ্ত্তির রূপান্তর ভিন্ন আর কিছুই নহে। ভুপালের প্ৰায় ৯ ক্রোশ পূর্বোত্তর বেতোয়া নদীতীরস্থ সাঞ্চিগ্রামে বৌদ্ধসম্প্রদায়ের অনেকগুলি স্তৃপাদি আছে। সেই স্থানের দক্ষিণ দ্বারে বৌদ্ধ-সম্প্রদায়ী তিনটি ধৰ্ম্মযন্ত্র একত্র খোদিত রহিয়াছে।