পাতা:বৌদ্ধ-ভারত.djvu/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮
বৌদ্ধ-ভারত

ও কল্যাণ ভাবনা করিতে হইবে। তাঁহাকে বুদ্ধের অনুশাসন প্রসন্ন মনে মানিয়া চলিতে হইবে। এইরূপ জীবন যাপন করিতে করিতে যখন তাঁহার বাসনার উপশম হইবে তখন তিনি সুখকর শাশ্বত নির্ব্বাণ প্রাপ্ত হইবেন। ধম্মপদে উক্ত লইয়াছে—

মেত্তাবিহারী যো ভিক খু পসন্নো বুদ্ধ সাসনে।
অধিগচ্ছে পদং সন্তং সঙ্খারূপসমং সুখং॥

নির্ব্বাণ-মধু বা অমৃতলাভের জন্য বুদ্ধ তাঁহার শিষ্যকে সাধনার যে পথ নির্দ্দেশ করিয়া দিয়াছেন, তাহা ইন্দ্রিয়বিজয়ের কল্যাণ-পন্থা। সাধককে প্রত্যেক পাদবিক্ষেপে সংযত হইয়া পথ চলিতে হয়। এই চলার পথেও তিনি আনন্দ লাভ করিয়া থাকেন:—

 “নিদ্দরো হোতি নিপ্পাপো ধম্মপীতি রসংপিব” ধর্ম্মপ্রীতিরস পান করিতে করিতে সাধক নির্ভীক ও নিষ্পাপ হইয়া থাকেন। নিষ্পাপ হইবার জন্য সাধক যে মানস-সংগ্রাম করেন, সেই সংগ্রামে আনন্দ আছে; এবং তিনি যখন জয়লাভ করেন, সেই বিজয়গৌরবেও আনন্দ আছে। সাধনপথে প্রত্যহ আনন্দরস পান করিতে করিতে সাধকের চিত্ত বিকশিত হইয়া উঠে, তিনি সকল পাপ পরিহার করিয়া সকল মঙ্গলের অনুষ্ঠান করেন। তিনি যে সুখ লাভ করেন তাহা ভোগের সুখ নহে, ত্যাগের সুখ, সংযমের সুখ। এই সুখকেই পরম আনন্দ বলিয়া বৌদ্ধশাস্ত্র প্রকাশ করিয়াছেন। এই সাধনার শেষেই তিনি “নিব্বানং পরমং সুখং” লাভ করেন। নির্ব্বাণ ও বিশ্বমৈত্রীর বক্তা ও প্রচারক ভগবান্ বুদ্ধ তাঁহার শিষ্যদিগকে অষ্টাঙ্গিক সাধনা ও ধ্যানের কথা শুনাইয়াই তাঁহার কর্ত্তব্য শেষ করেন নাই। তিনি তাঁহার সংঘের ভিক্ষুদিগকে সংঘের নিকটে, লোকসমাজে এবং আপনাদের অন্তরে বাহিরে সত্য হইবার জন্য উপদেশ দিয়াছেন। বৌদ্ধভিক্ষু এইরূপে সকলদিক দিয়া সত্য হইয়াই পরিণামে বৃহৎ সত্যের সাক্ষাৎকার লাভ করেন।

 বিনয়-পিটকে ভিক্ষুজীবনের প্রতিপাল্য নিয়মাবলী, আহার