পাতা:বৌদ্ধ-ভারত.djvu/৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬০
বৌদ্ধ-ভারত

অপর সকলকে অতিক্রম করিয়াছিল।”

 প্রাচীনকালে ভারতবর্ষের এই সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যয়ভার বহন করিতেন দেশের নরপতি ও সমৃদ্ধ ব্যক্তিগণ। বিশ্ববিদ্যালয়ে যাহারা বিদ্যার্থী হইয়া গমন করিত তাহাদিগকে কোনপ্রকার ব্যয় প্রদান করিতে হইত না। তক্ষশিলা এবং নালন্দার মত বিশ্ববিদ্যালয় সর্ব্বত্র ছিল না কিন্তু দেশের সর্ব্বত্রই ক্ষুদ্রবৃহৎ সঙ্ঘারামে বিদ্যাশিক্ষার ব্যবস্থা ছিল। এই সকল বিদ্যালয়ে ভারতীয় সর্ব্বপ্রকার দর্শন ও ধর্ম্মশাস্ত্র শিক্ষা প্রদান করা হইত। এখানে শত শত সুপণ্ডিত অধ্যাপক শিক্ষাদানে নিরত ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে যেমন দর্শন ও ধর্ম্ম শিক্ষা দেওয়া হইত তেমন গণিত ও জ্যোতির্ব্বিদ্যা শিক্ষাদানের ব্যবস্থা ছিল। চুয়াঙ নালন্দায় রাজকীয় মানমন্দির ও জলঘড়ি দেখিয়াছেন। তথাকার জলঘড়ি বিশুদ্ধ সময় প্রকাশ করিত।

 চারুকলা ও হস্তশিল্প শিক্ষাদানের নিমিত্ত বিদ্যালয় ছিল। ব্রাহ্মণ ও বৌদ্ধ ভিক্ষুগণ ভাস্কর্য্যে, প্রতিমাচিত্রণে এবং মন্দিরের আলঙ্কারিক চিত্রকার্য্যে সুদক্ষ ছিলেন। চারুকলায় যাঁহারা কুশলী ছিলেন তাঁহারা হস্তশিল্পকে হেয় বলিয়া মনে করিতেন। খৃষ্টীয় পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শতাব্দীতে বৌদ্ধ বিহারগুলি বিদ্যালোচনার কেন্দ্র হইয়া উঠিয়াছিল। নালন্দা বিদ্যায়তনের খ্যাতি সমস্ত এশিয়া মহাদেশে ব্যাপ্ত হইয়া পড়িয়াছিল। নালন্দা প্রাচীন ভারতের, কেহ কেহ মনে করেন সমস্ত পৃথিবীর মধ্যে বৃহত্তম বিদ্যায়তন ছিল। এখানকার “রত্নোদধি” নামক গ্রন্থালয়ে হীনযান ও মহাযান এই দুই বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের যাবতীয় গ্রন্থ যত্নপূর্ব্বক সংগৃহীত হইয়াছিল। উক্ত গ্রন্থালয় অতিবৃহৎ ও উচ্চতায় নয় তলা ছিল। ইহা আকারে বুদ্ধগয়া মন্দিরের তুল্য ছিল। তিব্বত দেশে এইরূপ জনশ্রুতি আছে যে, নালন্দামঠের অপ্রাপ্তবয়স্ক সাধুরা তৈথিক সাধুদিগকে অপমানিত করায় তাঁহারা ক্রোধান্ধ হইয়া গ্রন্থালয় দগ্ধ করিয়া ফেলেন। এইরূপ প্রকাশ যে, কতগুলি গ্রন্থ নাকি অলৌকিক